বিষয়বস্তুতে চলুন

ইসলামি বর্ষপঞ্জি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Md.Mahfujur Rahman Nisad (আলোচনা | অবদান)
 
(৮ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২৭টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
{{আজ/AD/SH/AH}}
{{আজ/AD/SH/AH}}
{{ইসলাম|সংস্কৃতি}}
{{ইসলাম|সংস্কৃতি}}
[[File: King Khaled airport exit stamp.jpg|thumbnail|১০ রজব ১৪২৮ হিজরি সন (২৪ জুলাই ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ) তারিখে [[বাদশাহ খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর|বাদশাহ খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে]] ইস্যুকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি সিলমোহর]]
[[চিত্র: King Khaled airport exit stamp.jpg|থাম্ব|১০ রজব ১৪২৮ হিজরি সন (২৪ জুলাই ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ) তারিখে [[বাদশাহ খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর|বাদশাহ খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে]] ইস্যুকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি সিলমোহর]]
'''হিজরি বর্ষপঞ্জি''' ({{lang-ar|ٱلتَّقْوِيم ٱلْهِجْرِيّ}} ''{{transl|ar|আত-তাকউইম আল-হিজরি}}''), যা '''চান্দ্র হিজরি''' বর্ষপঞ্জি ও (ইংরেজিতে) '''ইসলামি''', '''মুসলিম''' বা '''আরবীয় বর্ষপঞ্জি''' নামেও পরিচিত, হল একটি [[চন্দ্র পঞ্জিকা|চন্দ্র নির্ভর বর্ষপঞ্জি]] যার এক বছর ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিন বিশিষ্ট ১২টি [[চান্দ্র মাস]] নিয়ে গঠিত। এই বর্ষপঞ্জি [[মুসলমানদের ছুটির দিন|ইসলামি ছুটির দিন]] ও অনুষ্ঠানের সঠিক দিবস নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন [[রমজান|বার্ষিক রোজা রাখার সময়কাল]] ও [[হজ্জ]] করার সঠিক তারিখ। প্রায় সব মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো যেখানে [[সাধারণ বর্ষপঞ্জি]] হিসেবে [[গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি]] ব্যবহার হয়, অন্যদিকে [[গ্রেগরীয় মাসের আরবি নাম#পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও মেসোপটেমিয়া|পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও মেসোপটেমিয়ায়]] ([[ইরাক]], [[সিরিয়া]], [[জর্ডান]], [[লেবানন]] ও [[ফিলিস্তিন]]) [[অ্যাসিরীয় বর্ষপঞ্জী|সিরীয় মাসের নাম]] সমেত গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হয়।
'''হিজরি বর্ষপঞ্জি''' ({{lang-ar|ٱلتَّقْوِيم ٱلْهِجْرِيّ}} ''{{transl|ar|আত-তাকবিম আল-হিজরি}}''), যা '''চান্দ্র হিজরি''' বর্ষপঞ্জি ও (ইংরেজিতে) '''ইসলামি''', '''মুসলিম''' বা '''আরবীয় বর্ষপঞ্জি''' নামেও পরিচিত, হলো একটি [[চন্দ্র পঞ্জিকা|চন্দ্র নির্ভর বর্ষপঞ্জি]] যার এক বছর ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিন বিশিষ্ট ১২টি [[চান্দ্র মাস]] নিয়ে গঠিত। এই বর্ষপঞ্জি [[মুসলমানদের ছুটির দিন|ইসলামি ছুটির দিন]] ও অনুষ্ঠানের সঠিক দিবস নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন [[রমজান|বার্ষিক রোজা রাখার সময়কাল]] ও [[হজ্জ]] করার সঠিক তারিখ। প্রায় সব মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো যেখানে [[সাধারণ বর্ষপঞ্জি]] হিসেবে [[গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি]] ব্যবহার হয়, অন্যদিকে [[গ্রেগরীয় মাসের আরবি নাম#পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও মেসোপটেমিয়া|পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও মেসোপটেমিয়ায়]] ([[ইরাক]], [[সিরিয়া]], [[জর্ডান]], [[লেবানন]] ও [[ফিলিস্তিন]]) [[অ্যাসিরীয় বর্ষপঞ্জী|সিরীয় মাসের নাম]] সমেত গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হয়।


ইসলামি বর্ষপঞ্জিতে [[হিজরি সন]] ব্যবহার করা হয় যার [[আদর্শ (পঞ্জিকা সাল)|আদর্শ]] ৬২২ [[খ্রিস্টাব্দ|খ্রিস্টাব্দের]] [[ইসলামি নববর্ষ|ইসলামি নববর্ষে]] নির্ধারিত হয়েছে।<ref>{{cite magazine |url=https://www.soundvision.com/article/the-beginning-of-hijri-calendar |title=The Beginning of Hijri calendar |author=Paul Lunde |magazine=Saudi Aramco World Magazine |issue=November/December 2005 |access-date=1 January 2019}}</ref> এই বছরে [[মুহাম্মাদ]] ও তার সাহাবিরা [[মক্কা]] থেকে [[মদিনা]]য় স্থানান্তরিত হয়ে প্রথম মুসলিম সম্প্রদায় (''[[উম্মাহ]]'') প্রতিষ্ঠা করে, এই ঘটনাটিকে [[হিজরত]] নামে অভিহিত করা হয়। পশ্চিমে বিশ্বে এই সনের তারিখগুলোর পেছনে '''এএইচ''' ({{lang-la|Anno Hegirae}}, "হিজরতের বছর") লেখা হয় যা [[খ্রিস্টাব্দ|খ্রিস্টীয় যুগ]] (এডি), [[কমন এরা]] (সিই) এবং [[সৃষ্টাব্দ|ইহুদি সাল]] (এএম) এগুলোর পশ্চিমা সংক্ষিপ্ত রূপের অনুরূপ। মুসলিম দেশগুলোতে একে কখনো ইংরেজিতে '''এইচ'''<ref name="WH">{{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি|লেখক=Watt, W. Montgomery|editor1=P.J. Bearman|editor2=Th. Bianquis|editor3=[[Clifford Edmund Bosworth|C.E. Bosworth]]|editor4=E. van Donzel|editor5=W.P. Heinrichs|বিশ্বকোষ=[[Encyclopaedia of Islam]] Online|শিরোনাম=Hidjra|প্রকাশক=Brill Academic Publishers|issn=1573-3912}}</ref> এর আরবি শব্দ ({{lang|ar|سَنَة هِجْرِيَّة}} থেকে, সংক্ষিপ্ত করে {{lang|ar|ھ}}) হিসেবে লেখা হয়ে থাকে। ইংরেজিতে হিজরতের আগের বছরকে '''বিএইচ''' ("হিজরতের পূর্বে") হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।<ref>{{citation |url=http://www.sharjah.ae/registration-locations.aspx?Val=111 |title=Hijri Calendar |publisher=Government of Sharjah |access-date=21 January 2017 |archive-url=https://web.archive.org/web/20170202005514/http://www.sharjah.ae/registration-locations.aspx?Val=111 |archive-date=2 February 2017 |url-status=dead }}.</ref>
ইসলামি বর্ষপঞ্জিতে [[হিজরি সন]] ব্যবহার করা হয় যার [[আদর্শ (পঞ্জিকা সাল)|আদর্শ]] ৬২২ [[খ্রিস্টাব্দ|খ্রিস্টাব্দের]] [[ইসলামি নববর্ষ|ইসলামি নববর্ষে]] নির্ধারিত হয়েছে।<ref>{{cite magazine |url=https://www.soundvision.com/article/the-beginning-of-hijri-calendar |title=The Beginning of Hijri calendar |author=Paul Lunde |magazine=Saudi Aramco World Magazine |issue=November/December 2005 |access-date=1 January 2019}}</ref> এই বছরে [[মুহাম্মাদ]] ও তার সাহাবিরা [[মক্কা]] থেকে [[মদিনা]]য় স্থানান্তরিত হয়ে প্রথম মুসলিম সম্প্রদায় (''[[উম্মাহ]]'') প্রতিষ্ঠা করে, এই ঘটনাটিকে [[হিজরত]] নামে অভিহিত করা হয়। পশ্চিমে বিশ্বে এই সনের তারিখগুলোর পেছনে '''এএইচ''' ({{lang-la|Anno Hegirae}}, "হিজরতের বছর") লেখা হয় যা [[খ্রিস্টাব্দ|খ্রিস্টীয় সাল]] (এডি), [[কমন এরা]] (সিই) এবং [[সৃষ্টাব্দ|ইহুদি সাল]] (এএম) এগুলোর পশ্চিমা সংক্ষিপ্ত রূপের অনুরূপ। মুসলিম দেশগুলোতে একে কখনো ইংরেজিতে '''এইচ'''<ref name="WH">{{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি|লেখক=Watt, W. Montgomery|editor1=P.J. Bearman|editor2=Th. Bianquis|editor3=[[Clifford Edmund Bosworth|C.E. Bosworth]]|editor4=E. van Donzel|editor5=W.P. Heinrichs|বিশ্বকোষ=[[Encyclopaedia of Islam]] Online|শিরোনাম=Hidjra|প্রকাশক=Brill Academic Publishers|issn=1573-3912}}</ref> এর আরবি শব্দ ({{lang|ar|سَنَة هِجْرِيَّة}} থেকে, সংক্ষিপ্ত করে {{lang|ar|ھ}}) হিসেবে লেখা হয়ে থাকে। ইংরেজিতে হিজরতের আগের বছরকে '''বিএইচ''' ("হিজরতের পূর্বে") হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।<ref>{{citation |url=http://www.sharjah.ae/registration-locations.aspx?Val=111 |title=Hijri Calendar |publisher=Government of Sharjah |access-date=21 January 2017 |archive-url=https://web.archive.org/web/20170202005514/http://www.sharjah.ae/registration-locations.aspx?Val=111 |archive-date=2 February 2017 |url-status=dead }}.</ref>


{{As of|2021|August|10}}, {{Update after|2022|07|27||reason="current year" needs to be changed to 1444, the start and finish dates need to be revised and the citations need to be replaced [drop the old 2020 one, add a new one for 2022]. Finally this 'update after' needs itself to be reset for 2022 CE|text=হিজরি সন হল ১৪৪৩}}। [[গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি]]তে ১৪৪৩ হিজরি সন ১০ আগস্ট ২০২১ থেকে ২৮ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Important dates in Islamic Calendar in the Year 2021 |ইউআরএল=https://www.al-habib.info/islamic-calendar/global/global-islamic-calendar-year-2021-ce.htm#hijrievents |ওয়েবসাইট=Al-Habib.info |সংগ্রহের-তারিখ=8 September 2020}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Important dates in Islamic Calendar in the Year 2022 |ইউআরএল=https://www.al-habib.info/islamic-calendar/global/global-islamic-calendar-year-2022-ce.htm#hijrievents |ওয়েবসাইট=Al-Habib.info |সংগ্রহের-তারিখ=12 August 2021}}</ref>{{efn|ইসলামিক বর্ষপঞ্জির কোন রূপটি অনুসরণ করা হবে তার উপর সঠিক তারিখটি নির্ভর করে।}}
{{As of|2021|August|10}}, {{Update after|2022|07|27||reason="current year" needs to be changed to 1444, the start and finish dates need to be revised and the citations need to be replaced [drop the old 2020 one, add a new one for 2022]. Finally this 'update after' needs itself to be reset for 2022 CE|text=হিজরি সন হল ১৪৪৩}}। [[গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি]]তে ১৪৪৩ হিজরি সন ১০ আগস্ট ২০২১ থেকে ২৮ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Important dates in Islamic Calendar in the Year 2021 |ইউআরএল=https://www.al-habib.info/islamic-calendar/global/global-islamic-calendar-year-2021-ce.htm#hijrievents |ওয়েবসাইট=Al-Habib.info |সংগ্রহের-তারিখ=8 September 2020}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Important dates in Islamic Calendar in the Year 2022 |ইউআরএল=https://www.al-habib.info/islamic-calendar/global/global-islamic-calendar-year-2022-ce.htm#hijrievents |ওয়েবসাইট=Al-Habib.info |সংগ্রহের-তারিখ=12 August 2021}}</ref>{{efn|ইসলামি বর্ষপঞ্জির কোন রূপটি অনুসরণ করা হবে তার উপর সঠিক তারিখটি নির্ভর করে।}}


==ইতিহাস==
== ইতিহাস ==


===প্রাক-ইসলামি বর্ষপঞ্জি===
=== প্রাক-ইসলামি বর্ষপঞ্জি ===
{{মূল নিবন্ধ|প্রাক-ইসলামি আরবীয় বর্ষপঞ্জি}}
{{মূল নিবন্ধ|প্রাক-ইসলামি আরবীয় বর্ষপঞ্জি}}
মধ্য আরবে, বিশেষত [[মক্কা]]য় প্রাক-ইসলামি বর্ষপঞ্জির ব্যাপারে লিপিগত প্রমাণের অভাব রয়েছে তবে [[আব্বাসীয়]] যুগের মুসলিম লেখকদের লেখায় বিস্তারিত পাওয়া যায়। প্রাচীন [[দক্ষিণ আরব|দক্ষিণ আরবের]] শিলালিপিগুলি স্থানীয় বর্ষপঞ্জির একটি সংখ্যার ব্যবহার প্রকাশ করে। এই দক্ষিণ আরবীয় বর্ষপঞ্জিগুলো মাঝে অন্তত কিছু [[সৌরচান্দ্রিক বর্ষপঞ্জি|সৌরচান্দ্রিক ব্যবস্থা]] অনুসরণ করে। [[আবু রায়হান আল-বেরুনি|আল-বিরুনি]] ও [[আল-মাসুদী]] উভয় ধরনা করতেন যে প্রাচীন আরবরা মুসলিমদের মতো একই মাসের নাম ব্যবহার করত, যদিও তারা প্রাক-ইসলামি আরবদের দ্বারা ব্যবহৃত অন্যান্য মাসের নামও সংরক্ষণ করেছেন।<ref name="EI2-Tarikh"/>{{which|date=March 2021}}
মধ্য আরবে, বিশেষত [[মক্কা]]য় প্রাক-ইসলামি বর্ষপঞ্জির ব্যাপারে লিপিগত প্রমাণের অভাব রয়েছে তবে [[আব্বাসীয়]] যুগের মুসলিম লেখকদের লেখায় বিস্তারিত পাওয়া যায়। প্রাচীন [[দক্ষিণ আরব|দক্ষিণ আরবের]] শিলালিপিগুলো স্থানীয় বর্ষপঞ্জির একটি সংখ্যার ব্যবহার প্রকাশ করে। এই দক্ষিণ আরবীয় বর্ষপঞ্জিগুলো মাঝে অন্তত কিছু [[সৌরচান্দ্রিক বর্ষপঞ্জি|সৌরচান্দ্রিক ব্যবস্থা]] অনুসরণ করে। [[আবু রায়হান আল-বেরুনি|আল-বিরুনি]] ও [[আল-মাসুদী]] উভয় ধরনা করতেন যে প্রাচীন আরবরা মুসলিমদের মতো একই মাসের নাম ব্যবহার করত, যদিও তারা প্রাক-ইসলামি আরবদের দ্বারা ব্যবহৃত অন্যান্য মাসের নামও সংরক্ষণ করেছেন।<ref name="EI2-Tarikh"/>{{which|date=March 2021}}


ইসলামিক ঐতিহ্য এই ব্যাপারে একমত যে [[তিহামা]], [[হেজাজ]] এবং [[নাজদ|নজদের]] আরবদের নিকট অনুমোদিত (''[[হালাল]]'') এবং নিষিদ্ধ (''[[হারাম]]'') মাসের মধ্যে দুটি ধরণের পার্থক্য ছিল।<ref name="EI2-Tarikh">F.C. De Blois, "TA’RĪKH": I.1.iv. "Pre-Islamic and agricultural calendars of the Arabian peninsula", ''The Encyclopaedia of Islam'', 2nd edition, '''X''':260.</ref> নিষিদ্ধ মাসগুলি ছিল চারটি মাস যেখানে যুদ্ধ নিষিদ্ধ থাকত, সেগুলো ছিল যথাক্রমে রজব এবং [[হজ্জ|হজ্জের]] মৌসুমের চারপাশের তিনটি মাস, জিলক্বদ, জিলহজ্জ ও মুহাররম।<ref name="EI2-Tarikh" /> নিষিদ্ধ মাসের অনুরূপ ধারণাটি প্রকোপিয়াস দ্বারাও প্রমাণিত হয়েছে, যেখানে তিনি একটি যুদ্ধবিগ্রহের বর্ণনা করেছেন যে, দ্বিতীয় আল-মুনজির নামক পূর্ব আরবের [[লাখমীয়]] শাসক ৫৪১ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মকালীন অয়নকালে দুই মাসের জন্য সম্মানিত হয়েছিল।<ref name="EI2-Tarikh" /> যাইহোক, মুসলিম ঐতিহাসিকরা এই মাসগুলিকে একটি নির্দিষ্ট ঋতুর সাথে যুক্ত করেন না।<ref name="EI2-Tarikh" /> [[কুরআন]] চারটি নিষিদ্ধ মাসকে ''নাসি''' ({{Lang-ar|ٱلنَّسِيء}}''আন-নাসি'') এর সাথে যুক্ত করেছে , , নাসি একটি শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ "স্থগিত করা"।<ref name="EI2-Tarikh"/> মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে, স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি কিনানাহ গোত্রের একজন ব্যক্তি যিনি [[বনু কিনানাহ|কিনানার]] ''আল-কালামাস'' নামে পরিচিত এবং তার বংশধরদের দ্বারা পরিচালিত হত।<ref name="Moberg2">A. Moberg, "NASI'", ''The Encyclopaedia of Islam'', 2nd, VII: 977.</ref>
ইসলামিক ঐতিহ্য এই ব্যাপারে একমত যে [[তিহামা]], [[হেজাজ]] এবং [[নাজদ|নজদের]] আরবদের নিকট অনুমোদিত (''[[হালাল]]'') এবং নিষিদ্ধ (''[[হারাম]]'') মাসের মধ্যে দুটি ধরনের পার্থক্য ছিল।<ref name="EI2-Tarikh">F.C. De Blois, "TA’RĪKH": I.1.iv. "Pre-Islamic and agricultural calendars of the Arabian peninsula", ''The Encyclopaedia of Islam'', 2nd edition, '''X''':260.</ref> নিষিদ্ধ মাসগুলি ছিল চারটি মাস যেখানে যুদ্ধ নিষিদ্ধ থাকত, সেগুলো ছিল যথাক্রমে রজব এবং [[হজ্জ|হজ্জের]] মৌসুমের চারপাশের তিনটি মাস, জিলক্বদ, জিলহজ্জ ও মুহাররম।<ref name="EI2-Tarikh" /> নিষিদ্ধ মাসের অনুরূপ ধারণাটি প্রকোপিয়াস দ্বারাও প্রমাণিত হয়েছে, যেখানে তিনি একটি যুদ্ধবিগ্রহের বর্ণনা করেছেন যে, দ্বিতীয় আল-মুনজির নামক পূর্ব আরবের [[লাখমীয়]] শাসক ৫৪১ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মকালীন অয়নকালে দুই মাসের জন্য সম্মানিত হয়েছিল।<ref name="EI2-Tarikh" /> যাইহোক, মুসলিম ঐতিহাসিকরা এই মাসগুলিকে একটি নির্দিষ্ট ঋতুর সাথে যুক্ত করেন না।<ref name="EI2-Tarikh" /> [[কুরআন]] চারটি নিষিদ্ধ মাসকে ''নাসি''' ({{Lang-ar|ٱلنَّسِيء}}''আন-নাসি'') এর সাথে যুক্ত করেছে , , নাসি একটি শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ "স্থগিত করা"।<ref name="EI2-Tarikh"/> মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে, স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি কিনানাহ গোত্রের একজন ব্যক্তি যিনি [[কিনানা]] ''আল-কালামাস'' নামে পরিচিত এবং তার বংশধরদের দ্বারা পরিচালিত হত।<ref name="Moberg2">A. Moberg, "NASI'", ''The Encyclopaedia of Islam'', 2nd, VII: 977.</ref>


''নাসি'র'' ধারণার বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রস্তাব করা হয়েছে।<ref>For an overview of the various theories and a discussion of the problem of "hindsight chronology" in early and pre-Islamic sources, see [http://etheses.dur.ac.uk/978/1/978.pdf?EThOS%20(BL) Maurice A. McPartlan, ''The Contribution of Qu'rān and Hadīt to Early Islamic Chronology'' (Durham, 1997)].</ref> কিছু পণ্ডিত, উভয় মুসলিম<ref>Mahmud Effendi (1858), as discussed in Sherrard Beaumont Burnaby, ''[[iarchive:elementsofjewish00burnuoft|Elements of the Jewish and Muhammadan calendars]]'' (London: 1901), pp. 460–470.</ref><ref>According to "Tradition", repeatedly cited by F.C. De Blois.</ref> ও পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ,<ref name="EI2-Tarikh"/><ref name="Moberg2"/> মনে করেন যে মধ্য আরবে ব্যবহৃত [[প্রাক-ইসলামি আরব|প্রাক-ইসলামি]] বর্ষপঞ্জিটি ছিল আধুনিক ইসলামি বর্ষপঞ্জির অনুরূপ একটি সম্পূর্ণরূপে চন্দ্র বর্ষপঞ্জি। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, ''নাসি''' মক্কার আরবদের প্রাক-ইসলামি অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত, যেখানে তারা একটি নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে নিষিদ্ধ মাসগুলির বণ্টন পরিবর্তন করবে বর্ষপঞ্জির হেরফের না করে। এই ব্যাখ্যাটি আরব ইতিহাসবিদ এবং অভিধানবিদদের দ্বারা সমর্থিত, যেমন [[ইবনে হিশাম]], ইবনে মঞ্জুর, এবং [[তাফসীর|কুরআনের ব্যাখ্যার]] সংকলন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Muḥāḍarāt tārīkh al-Umam al-Islāmiyya|শেষাংশ=Muḥammad al-Khuḍarī Bayk|বছর=1935|প্রকাশক=Al-maktaba al-tijāriyya|পাতাসমূহ=59–60|সংস্করণ=4th}}</ref>
''নাসি'র'' ধারণার বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রস্তাব করা হয়েছে।<ref>For an overview of the various theories and a discussion of the problem of "hindsight chronology" in early and pre-Islamic sources, see [http://etheses.dur.ac.uk/978/1/978.pdf?EThOS%20(BL) Maurice A. McPartlan, ''The Contribution of Qu'rān and Hadīt to Early Islamic Chronology'' (Durham, 1997)].</ref> কিছু পণ্ডিত, উভয় মুসলিম<ref>Mahmud Effendi (1858), as discussed in Sherrard Beaumont Burnaby, ''[[iarchive:elementsofjewish00burnuoft|Elements of the Jewish and Muhammadan calendars]]'' (London: 1901), pp. 460–470.</ref><ref>According to "Tradition", repeatedly cited by F.C. De Blois.</ref> ও পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ,<ref name="EI2-Tarikh"/><ref name="Moberg2"/> মনে করেন যে মধ্য আরবে ব্যবহৃত [[প্রাক-ইসলামি আরব|প্রাক-ইসলামি]] বর্ষপঞ্জিটি ছিল আধুনিক ইসলামি বর্ষপঞ্জির অনুরূপ একটি সম্পূর্ণরূপে চন্দ্র বর্ষপঞ্জি। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, ''নাসি''' মক্কার আরবদের প্রাক-ইসলামি অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত, যেখানে তারা একটি নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে নিষিদ্ধ মাসগুলির বণ্টন পরিবর্তন করবে বর্ষপঞ্জির হেরফের না করে। এই ব্যাখ্যাটি আরব ইতিহাসবিদ এবং অভিধানবিদদের দ্বারা সমর্থিত, যেমন [[ইবনে হিশাম]], ইবনে মঞ্জুর, এবং [[তাফসীর|কুরআনের ব্যাখ্যার]] সংকলন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Muḥāḍarāt tārīkh al-Umam al-Islāmiyya|শেষাংশ=Muḥammad al-Khuḍarī Bayk|বছর=1935|প্রকাশক=Al-maktaba al-tijāriyya|পাতাসমূহ=59–60|সংস্করণ=4th}}</ref>
২১ নং লাইন: ২১ নং লাইন:
এটি একটি প্রারম্ভিক [[সাবাইয়ান ভাষা|সাবাইয়ীয়]] শিলালিপি দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে, যেখানে যুদ্ধের কারণে একটি ধর্মীয় আচার "স্থগিত" (''নাসি'' ) লেখা হয়েছে। এই শিলালিপির প্রেক্ষাপট অনুসারে, ''নাসি''' ক্রিয়াপদের সাথে আন্তঃকালকরণের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, তবে শুধুমাত্র বর্ষপঞ্জির মধ্যেই চলমান ধর্মীয় ঘটনাগুলির সাথে তা সম্পৃক্ত। এই প্রাচীন শিলালিপি এবং কোরানের ধর্মীয় ধারণার মধ্যে সাদৃশ্য ইঙ্গিত করে যে অ-বর্ষপঞ্জির স্থগিতকরণও ''নাসি'-'' এর কোরানের অর্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।<ref name="EI2-Tarikh"/> এইভাবে ''[[এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম|ইসলামের বিশ্বকোষের]]'' উপসংহারে বলা হয়েছে ''"[নাসি'] এর আরবি পদ্ধতি শুধুমাত্র মক্কার আশেপাশে হজ্জ ও এর সাথে সম্পর্কিত মেলাগুলিকে বছরের একটি উপযুক্ত মৌসুমে স্থানান্তরিত করার উদ্দেশ্যে করা হতে পারে।'' ''এটি সাধারণভাবে পালন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট বর্ষপঞ্জি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ছিল না।"''<ref>The Encyclopedia of Islam, 2nd edition, Index, p. 441</ref> "স্থির বর্ষপঞ্জি" শব্দটি দ্বারা সাধারণত অ-আন্তঃকালিত বর্ষপঞ্জিকে বোঝানো হয়।
এটি একটি প্রারম্ভিক [[সাবাইয়ান ভাষা|সাবাইয়ীয়]] শিলালিপি দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে, যেখানে যুদ্ধের কারণে একটি ধর্মীয় আচার "স্থগিত" (''নাসি'' ) লেখা হয়েছে। এই শিলালিপির প্রেক্ষাপট অনুসারে, ''নাসি''' ক্রিয়াপদের সাথে আন্তঃকালকরণের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, তবে শুধুমাত্র বর্ষপঞ্জির মধ্যেই চলমান ধর্মীয় ঘটনাগুলির সাথে তা সম্পৃক্ত। এই প্রাচীন শিলালিপি এবং কোরানের ধর্মীয় ধারণার মধ্যে সাদৃশ্য ইঙ্গিত করে যে অ-বর্ষপঞ্জির স্থগিতকরণও ''নাসি'-'' এর কোরানের অর্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।<ref name="EI2-Tarikh"/> এইভাবে ''[[এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম|ইসলামের বিশ্বকোষের]]'' উপসংহারে বলা হয়েছে ''"[নাসি'] এর আরবি পদ্ধতি শুধুমাত্র মক্কার আশেপাশে হজ্জ ও এর সাথে সম্পর্কিত মেলাগুলিকে বছরের একটি উপযুক্ত মৌসুমে স্থানান্তরিত করার উদ্দেশ্যে করা হতে পারে।'' ''এটি সাধারণভাবে পালন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট বর্ষপঞ্জি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ছিল না।"''<ref>The Encyclopedia of Islam, 2nd edition, Index, p. 441</ref> "স্থির বর্ষপঞ্জি" শব্দটি দ্বারা সাধারণত অ-আন্তঃকালিত বর্ষপঞ্জিকে বোঝানো হয়।


অন্যান্যরা একমত যে এটি মূলত একটি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি ছিল, তবে পরামর্শ দেওয়া হয় যে [[হিজরত|হিজরতের]] প্রায় ২০০ বছর পূর্বে এটি একটি সৌরচান্দ্রিক বর্ষপঞ্জিতে রূপান্তরিত হয়েছিল যাতে সময়ে সময়ে একটি আন্তঃগণনাকৃত মাস যুক্ত করা হয় যাতে বছরের ঋতুতে তীর্থযাত্রা ঠিক রাখা যায় যখন পণ্যসামগ্রী সবচেয়ে বেশি বিক্রয় হত। এই ব্যাখ্যাটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতিষী এবং জ্যোতির্বিদ [[আবু মাশর আল-বালখি]] এবং পরবর্তীতে [[আবু রায়হান আল-বেরুনি|আল-বিরুনি]],<ref name="Biruni">[[al-Biruni]], [https://books.google.com/books?id=kUpmAAAAMAAJ&printsec=frontcover#PPA73,M1 "Intercalation of the Ancient Arabs", ''The Chronology of Ancient Nations''], tr. [[Eduard Sachau|C. Edward Sachau]], (London: William H. Allen, 1000/1879), pp. 13–14, 73–74.</ref> [[আল-মাসুদী]] ও কিছু পশ্চিমা পণ্ডিত।<ref name="Moberg1">A. Moberg, "[https://books.google.com/books?id=9JQ3AAAAIAAJ&printsec=frontcover#PPA856,M1 NASI']", ''E.J. Brill's first encyclopaedia of Islam''</ref> এই ব্যাখ্যাটি ''নাসি'কে'' "আন্তঃগণনা" (''কাবিসা'') এর আরবি শব্দের প্রতিশব্দ বলে মনে করে। আরবরা, আবু মাশর কর্তৃক উল্লিখিত একটি ব্যাখ্যা অনুসারে, ইহুদিদের কাছ থেকে এই ধরণের ধারণার কথা জানতে পেরেছিল।<ref name="Moberg2"/><ref name="Biruni" /><ref name=Kitab>[[Ja'far ibn Muhammad Abu Ma'shar al-Balkhi|Abu Ma'shar al-Balkhi]] (787–886), ''[http://gallica.bnf.fr/ark:/12148/bpt6k93171b.image.f166.langFR Kitab al-Uluf]'', ''Journal Asiatique'', series 5, '''xi''' (1858) 168+. {{in lang|fr|ar}}</ref> ইহুদি ''নাসি'' ছিলেন একজন আধিকারিক যিনি সিদ্ধান্ত নিতেম কখন ইহুদি বর্ষপঞ্জিতে অতিরিক্ত মাস যুক্ত করতে হবে।<ref>Bab. Talmud, Sanhedrin, p. 11.</ref> কিছু সূত্র বলে যে আরবরা ইহুদিদের রীতি অনুসরণ করেছিল এবং উনিশ বছরের মধ্যে সাত মাস আন্তঃকালিত করেছিল, অন্যথায় তারা ২৪ বছরের মধ্যে নয় মাস পার করেছিল; তবে এই বিষয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে কোন ঐকমত্য নেই।<ref>Bonner 2011, page 21</ref>
অন্যান্যরা একমত যে এটি মূলত একটি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি ছিল, তবে পরামর্শ দেওয়া হয় যে [[হিজরত|হিজরতের]] প্রায় ২০০ বছর পূর্বে এটি একটি সৌরচান্দ্রিক বর্ষপঞ্জিতে রূপান্তরিত হয়েছিল যাতে সময়ে সময়ে একটি আন্তঃগণনাকৃত মাস যুক্ত করা হয় যাতে বছরের ঋতুতে তীর্থযাত্রা ঠিক রাখা যায় যখন পণ্যসামগ্রী সবচেয়ে বেশি বিক্রয় হত। এই ব্যাখ্যাটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতিষী এবং জ্যোতির্বিদ [[আবু মাশর আল-বালখি]] এবং পরবর্তীতে [[আবু রায়হান আল-বেরুনি|আল-বিরুনি]],<ref name="Biruni">[[al-Biruni]], [https://books.google.com/books?id=kUpmAAAAMAAJ&printsec=frontcover#PPA73,M1 "Intercalation of the Ancient Arabs", ''The Chronology of Ancient Nations''], tr. [[Eduard Sachau|C. Edward Sachau]], (London: William H. Allen, 1000/1879), pp. 13–14, 73–74.</ref> [[আল-মাসুদী]] ও কিছু পশ্চিমা পণ্ডিত।<ref name="Moberg1">A. Moberg, "[https://books.google.com/books?id=9JQ3AAAAIAAJ&printsec=frontcover#PPA856,M1 NASI']", ''E.J. Brill's first encyclopaedia of Islam''</ref> এই ব্যাখ্যাটি ''নাসি'কে'' "আন্তঃগণনা" (''কাবিসা'') এর আরবি শব্দের প্রতিশব্দ বলে মনে করে। আরবরা, আবু মাশর কর্তৃক উল্লিখিত একটি ব্যাখ্যা অনুসারে, ইহুদিদের কাছ থেকে এই ধরনের ধারণার কথা জানতে পেরেছিল।<ref name="Moberg2"/><ref name="Biruni" /><ref name="Kitab">[[Ja'far ibn Muhammad Abu Ma'shar al-Balkhi|Abu Ma'shar al-Balkhi]] (787–886), ''[http://gallica.bnf.fr/ark:/12148/bpt6k93171b.image.f166.langFR Kitab al-Uluf]'', ''Journal Asiatique'', series 5, '''xi''' (1858) 168+. {{in lang|fr|ar}}</ref> ইহুদি ''নাসি'' ছিলেন একজন আধিকারিক যিনি সিদ্ধান্ত নিতেম কখন ইহুদি বর্ষপঞ্জিতে অতিরিক্ত মাস যুক্ত করতে হবে।<ref>Bab. Talmud, Sanhedrin, p. 11.</ref> কিছু সূত্র বলে যে আরবরা ইহুদিদের রীতি অনুসরণ করেছিল এবং উনিশ বছরের মধ্যে সাত মাস আন্তঃকালিত করেছিল, অন্যথায় তারা ২৪ বছরের মধ্যে নয় মাস পার করেছিল; তবে এই বিষয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে কোন ঐকমত্য নেই।<ref>Bonner 2011, page 21</ref>


===নাসি নিষিদ্ধকরণ===
=== নাসি নিষিদ্ধকরণ ===
{{further|আন-নাসি}} [[File:Maome.jpg|thumb|মুহাম্মাদের নাসিকে নিষিদ্ধ করার চিত্র। [[আবু রায়হান আল-বেরুনি|আল-বিরুনির]] ''[[গত শতাব্দীর অবশিষ্ট লক্ষণ]]''-এর একটি সচিত্র অনুলিপি থেকে পাওয়া গেছে (১৪শ শতাব্দীর প্রথম দিকের [[ইলখানাত|ইলখানাতীয়]] পাণ্ডুলিপির ১৭শ শতাব্দীর অনুলিপি)।<ref>From an illustrated manuscript of Al-Biruni's 11th-century ''[[Vestiges of the Past]]'' (Bibliothèque Nationale, Paris, Arabe 1489 fol. 5v. (Bibliothèque Nationale on-line catalog). See also: Robert Hillenbrand, "Images of Muhammad in al-Bīrūnī's Chronology of Ancient Nations", in: R. Hillenbrand (ed.), ''Persian Painting from the Mongols to the Qajars: Studies in Honour of Basil W. Robinson'' (London/New York: I.B. Tauris Publishers, 2000), pp. 129–46.</ref>]]
{{further|আন-নাসি}} [[চিত্র:Maome.jpg|থাম্ব|মুহাম্মাদের নাসিকে নিষিদ্ধ করার চিত্র। [[আবু রায়হান আল-বেরুনি|আল-বিরুনির]] ''[[গত শতাব্দীর অবশিষ্ট লক্ষণ]]''-এর একটি সচিত্র অনুলিপি থেকে পাওয়া গেছে (১৪শ শতাব্দীর প্রথম দিকের [[ইলখানাত|ইলখানাতীয়]] পাণ্ডুলিপির ১৭শ শতাব্দীর অনুলিপি)।<ref>From an illustrated manuscript of Al-Biruni's 11th-century ''[[Vestiges of the Past]]'' (Bibliothèque Nationale, Paris, Arabe 1489 fol. 5v. (Bibliothèque Nationale on-line catalog). See also: Robert Hillenbrand, "Images of Muhammad in al-Bīrūnī's Chronology of Ancient Nations", in: R. Hillenbrand (ed.), ''Persian Painting from the Mongols to the Qajars: Studies in Honour of Basil W. Robinson'' (London/New York: I.B. Tauris Publishers, 2000), pp. 129–46.</ref>]]


হিজরতের দশম বছরে [[কুরআন|কুরআনের]] ([[সূরা আত-তাওবাহ্‌|অধ্যায় ৯]]:৩৬-৩৭) লেখা অনুযায়ী মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে [[ইসলাম ধর্মে ঈশ্বর|ঈশ্বরক]] "নাসির নিষেধাজ্ঞা" প্রকাশ করেছেন।
হিজরতের দশম বছরে [[কুরআন|কুরআনের]] ([[সূরা আত-তাওবাহ্‌|অধ্যায় ৯]]:৩৬-৩৭) লেখা অনুযায়ী মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে [[ইসলাম ধর্মে ঈশ্বর|ঈশ্বর]] "নাসির নিষেধাজ্ঞা" প্রকাশ করেছেন।


{{Quote|নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস গণনায় বারটি। এর মধ্যে বিশেষ রূপে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। অতএব তোমরা এ মাসগুলিতে (ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করে) নিজেদের ক্ষতি সাধন করনা, আর মুশরিকদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ করে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।<br/>নিশ্চয়ই এই (মাসগুলির) স্থানান্তর কুফরের মধ্যে আরও কুফরী বৃদ্ধি করা, যা দ্বারা কাফিরদেরকে পথভ্রষ্ট করা হয়। (তা এ রূপে যে) তারা সেই হারাম মাসকে কোন বছর হালাল করে নেয় এবং কোন বছর হারাম মনে করে, আল্লাহ যে মাসগুলিকে হারাম করেছেন, যেন তারা ওগুলির সংখ্যা পূর্ণ করে নিতে পারে, অতঃপর তারা আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলিকে হালাল করে নেয়, তাদের দুস্কর্মগুলি তাদের কাছে শোভনীয় মনে হয়, আর আল্লাহ এইরূপ কাফিরদেরকে হিদায়াত (এর তাওফীক দান) করেননা।|[[সূরা আত-তাওবাহ্‌|সূরা ৯]], [[আয়াত]] ৩৬-৩৭<ref>{{Cite quran|9|36|e=37|s=ns}}</ref>}}
{{Quote|নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস গণনায় বারটি। এর মধ্যে বিশেষ রূপে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। অতএব তোমরা এ মাসগুলিতে (ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করে) নিজেদের ক্ষতি সাধন করনা, আর মুশরিকদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ করে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।<br/>নিশ্চয়ই এই (মাসগুলির) স্থানান্তর কুফরের মধ্যে আরও কুফরী বৃদ্ধি করা, যা দ্বারা কাফিরদেরকে পথভ্রষ্ট করা হয়। (তা এ রূপে যে) তারা সেই হারাম মাসকে কোন বছর হালাল করে নেয় এবং কোন বছর হারাম মনে করে, আল্লাহ যে মাসগুলিকে হারাম করেছেন, যেন তারা ওগুলির সংখ্যা পূর্ণ করে নিতে পারে, অতঃপর তারা আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলিকে হালাল করে নেয়, তাদের দুস্কর্মগুলি তাদের কাছে শোভনীয় মনে হয়, আর আল্লাহ এইরূপ কাফিরদেরকে হিদায়াত (এর তাওফীক দান) করেননা।|[[সূরা আত-তাওবাহ্‌|সূরা ৯]], [[আয়াত]] ৩৬-৩৭<ref>{{Cite quran|9|36|e=37|s=ns}}</ref>}}
৩২ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:
''নাসি'র'' নিষেধাজ্ঞা সম্ভবত তখন ঘোষণা করা হয়েছিল যখন আন্তঃগণনাকৃত মাসটি ''নাসি'' মাস শুরু হওয়ার ঠিক আগে তার অবস্থানে ফিরে এসেছিল। যদি নাসি'র অর্থ আন্তঃকালকরণ, তাহলে ১ম হিজরি ও ১০ম হিজরির মধ্যে আন্তঃকালীয় মাসের সংখ্যা এবং অবস্থান অনিশ্চিত; হিজরত, [[বদরের যুদ্ধ|বদর]] [[উহুদের যুদ্ধ|উহুদ]] এবং [[খন্দকের যুদ্ধ|খন্দকের যুদ্ধের]] মতো ইসলামের প্রাথমিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর জন্য সাধারণত উদ্ধৃত করা পশ্চিমা বর্ষপঞ্জিত তারিখগুলো সতর্কতার সাথে দেখা উচিত কারণ সেগুলো এক, দুই বা এমনকি তিনটি চন্দ্র মাস পর্যন্ত ভুল হতে পারে।
''নাসি'র'' নিষেধাজ্ঞা সম্ভবত তখন ঘোষণা করা হয়েছিল যখন আন্তঃগণনাকৃত মাসটি ''নাসি'' মাস শুরু হওয়ার ঠিক আগে তার অবস্থানে ফিরে এসেছিল। যদি নাসি'র অর্থ আন্তঃকালকরণ, তাহলে ১ম হিজরি ও ১০ম হিজরির মধ্যে আন্তঃকালীয় মাসের সংখ্যা এবং অবস্থান অনিশ্চিত; হিজরত, [[বদরের যুদ্ধ|বদর]] [[উহুদের যুদ্ধ|উহুদ]] এবং [[খন্দকের যুদ্ধ|খন্দকের যুদ্ধের]] মতো ইসলামের প্রাথমিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর জন্য সাধারণত উদ্ধৃত করা পশ্চিমা বর্ষপঞ্জিত তারিখগুলো সতর্কতার সাথে দেখা উচিত কারণ সেগুলো এক, দুই বা এমনকি তিনটি চন্দ্র মাস পর্যন্ত ভুল হতে পারে।


এই নিষেধাজ্ঞাটি মুহাম্মাদ বিদায়ী খুতবার সময় উল্লেখ করেছিলেন যা মক্কায় [[বিদায় হজ্জ|বিদায়ী হজ্জের]] সময় [[আরাফাতের পাহাড়|আরাফাত পর্বতে]] ১০ হিজরির ৯ [[জ্বিলহজ্জ]] তারিখের [[বিদায় হজ্জের ভাষণ]] (জুলীয় তারিখ শুক্রবার ৬ মার্চ, ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ) দেওয়া হয়েছিল।
এই নিষেধাজ্ঞাটি মুহাম্মাদ বিদায়ী খুতবার সময় উল্লেখ করেছিলেন যা মক্কায় [[বিদায় হজ্জ|বিদায়ী হজ্জের]] সময় [[আরাফাতের পাহাড়|আরাফাত পর্বতে]] ১০ হিজরির ৯ [[জ্বিলহজ্জ]] তারিখের [[বিদায় হজ্জের ভাষণ]] (জুলীয় তারিখ শুক্রবার ৬ মার্চ, ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ) দেওয়া হয়েছিল।
{{quote|অবশ্যই নাসি' একটি জঘন্য সংযোজন, যা কাফেরদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে। এক বছর তারা নাসিকে অনুমোদন করে, আরেক বছর তারা নিষেধ করে। তারা পবিত্র মাসের সংখ্যার ক্ষেত্রে ঐশ্বরিক নির্দেশ পালন করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা যা আল্লাহ অলঙ্ঘনীয় বলে ঘোষণা করেছেন তা অপবিত্র করে এবং ঈশ্বর যা অপবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন তা পবিত্র করে। নিঃসন্দেহে সময়, সৃষ্টি থেকে, আসমান ও জমিনের সৃষ্টির সময় যেমনটি হয়ে এসেছে। আল্লাহর দৃষ্টিতে মাসের সংখ্যা বারো। এই বারো মাসের মধ্যে চারটি পবিত্র, যথাক্রমে, রজব, যা একা এবং তিনটি পরপর।<ref>Sherrard Beaumont Burnaby, ''[https://archive.org/details/elementsofjewish00burnuoft Elements of the Jewish and Muhammadan calendars]'' (London: 1901) 370.</ref>}}
{{quote|অবশ্যই নাসি' একটি জঘন্য সংযোজন, যা কাফিরদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে। এক বছর তারা নাসিকে অনুমোদন করে, আরেক বছর তারা নিষেধ করে। তারা পবিত্র মাসের সংখ্যার ক্ষেত্রে ঐশ্বরিক নির্দেশ পালন করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা যা আল্লাহ অলঙ্ঘনীয় বলে ঘোষণা করেছেন তা অপবিত্র করে এবং যা অপবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন তা পবিত্র করে। নিঃসন্দেহে সময়, সৃষ্টি থেকে, আসমান ও জমিনের সৃষ্টির সময় যেমনটি হয়ে এসেছে। আল্লাহর দৃষ্টিতে মাসের সংখ্যা বারো। এই বারো মাসের মধ্যে চারটি পবিত্র, যথাক্রমে, রজব, যা একা এবং তিনটি পরপর।<ref>Sherrard Beaumont Burnaby, ''[https://archive.org/details/elementsofjewish00burnuoft Elements of the Jewish and Muhammadan calendars]'' (London: 1901) 370.</ref>}}


মুহাম্মাদ উল্লিখিত তিনটি পরপর নিষিদ্ধ মাস (যে মাসগুলিতে যুদ্ধ নিষিদ্ধ) হল [[জ্বিলকদ]], [[জ্বিলহজ্জ]] এবং [[মুহররম]]। একক নিষিদ্ধ মাস হল [[রজব]]। এই মাসগুলোকে নতুন ইসলামিক বর্ষপঞ্জি ও প্রাক-ইসলামি মক্কীয় বর্ষপঞ্জি উভয় ক্ষেত্রেই নিষিদ্ধ বলে মনে করা হতো।<ref name="EI2-Tarikh"/><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Islamic New Year: To celebrate, or not to celebrate? |ইউআরএল=https://nation.com.pk/05-Oct-2016/islamic-new-year-to-celebrate-or-not-to-celebrate |কর্ম=The Nation |তারিখ=5 October 2016 |ভাষা=en}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=The four sacred months |ইউআরএল=https://saudigazette.com.sa/article/152932 |কর্ম=Saudigazette |তারিখ=15 April 2016 |ভাষা=en}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Muharram 2020: Al Hijri date, significance of the Islamic New Year |ইউআরএল=https://www.hindustantimes.com/more-lifestyle/muharram-2020-al-hijri-date-and-significance-of-the-islamic-new-year/story-XfqdLHudDcI20RVWKQtOzL.html |কর্ম=Hindustan Times |তারিখ=20 August 2020 |ভাষা=en}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=The beginning of a new Islamic year |ইউআরএল=https://gulf-times.com/story/671105/The-beginning-of-a-new-Islamic-year |ওয়েবসাইট=Gulf-Times |ভাষা=ar |তারিখ=20 August 2020}}</ref>
মুহাম্মাদ উল্লিখিত তিনটি পরপর নিষিদ্ধ মাস (যে মাসগুলিতে যুদ্ধ নিষিদ্ধ) হল [[জ্বিলকদ]], [[জ্বিলহজ্জ]] এবং [[মুহররম]]। একক নিষিদ্ধ মাস হল [[রজব]]। এই মাসগুলোকে নতুন ইসলামি বর্ষপঞ্জি ও প্রাক-ইসলামি মক্কীয় বর্ষপঞ্জি উভয় ক্ষেত্রেই নিষিদ্ধ বলে মনে করা হতো।<ref name="EI2-Tarikh"/><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Islamic New Year: To celebrate, or not to celebrate? |ইউআরএল=https://nation.com.pk/05-Oct-2016/islamic-new-year-to-celebrate-or-not-to-celebrate |কর্ম=The Nation |তারিখ=5 October 2016 |ভাষা=en |সংগ্রহের-তারিখ=২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ |আর্কাইভের-তারিখ=১০ আগস্ট ২০২১ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20210810091710/https://nation.com.pk/05-Oct-2016/islamic-new-year-to-celebrate-or-not-to-celebrate |ইউআরএল-অবস্থা=অকার্যকর }}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=The four sacred months |ইউআরএল=https://saudigazette.com.sa/article/152932 |কর্ম=Saudigazette |তারিখ=15 April 2016 |ভাষা=en}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Muharram 2020: Al Hijri date, significance of the Islamic New Year |ইউআরএল=https://www.hindustantimes.com/more-lifestyle/muharram-2020-al-hijri-date-and-significance-of-the-islamic-new-year/story-XfqdLHudDcI20RVWKQtOzL.html |কর্ম=Hindustan Times |তারিখ=20 August 2020 |ভাষা=en}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=The beginning of a new Islamic year |ইউআরএল=https://gulf-times.com/story/671105/The-beginning-of-a-new-Islamic-year |ওয়েবসাইট=Gulf-Times |ভাষা=ar |তারিখ=20 August 2020}}</ref>


==সপ্তাহের দিনসমূহ==
== সপ্তাহের দিনসমূহ ==
ইসলামি দিন শুরু হয় সূর্যাস্তের সময়। মুসলিমরা "সমাবেশের দিন"-এর ({{transl|ar|ইয়োম আল-জুমাহ}}) দুপুরে একটি মসজিদে প্রার্থনার জন্য জড়ো হয় যা দিনের চন্দ্র শুরুর সাথে মিলে যায় যা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, সূর্য সম্পূর্ণরূপে অস্ত যাওয়ার মুহুর্তে ঘটে।{{citation needed|date=May 2021}} এ দিন শুরু হয় মাগরিবের মাধ্যমে।{{citation needed|date=May 2021}}
ইসলামি দিন শুরু হয় সূর্যাস্তের সময়। মুসলিমরা "সমাবেশের দিন"-এর ({{transl|ar|ইয়োম আল-জুমাহ}}) দুপুরে একটি মসজিদে প্রার্থনার জন্য জড়ো হয় যা দিনের চন্দ্র শুরুর সাথে মিলে যায় যা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, সূর্য সম্পূর্ণরূপে অস্ত যাওয়ার মুহুর্তে ঘটে।{{citation needed|date=May 2021}} এ দিন শুরু হয় মাগরিবের মাধ্যমে।{{citation needed|date=May 2021}}


৬৯ নং লাইন: ৬৯ নং লাইন:
| ১ || [[মুহররম]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|محرّم}} || নিষিদ্ধ || এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ (হারাম) বিধায় এটি পবিত্র মাস বলে বিবেচিত। এ মাসের ১০ম দিনে [[আশুরা]] পালিত হয়।
| ১ || [[মুহররম]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|محرّم}} || নিষিদ্ধ || এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ (হারাম) বিধায় এটি পবিত্র মাস বলে বিবেচিত। এ মাসের ১০ম দিনে [[আশুরা]] পালিত হয়।
|-
|-
| ২ || [[সফর]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|صفر}} || রিক্ত, শূন্য, ভ্রমণ || এ মাসের এরূপ নামকরণের কারণ সম্ভবত এটি যে, প্রাক-ইসলামিক যুগে আরবীয় ঘর-বাড়ি এই সময়ে শূন্য থাকতো যখন গৃহস্থরা খাবার সংগ্রহ করতো। অন্যমতে, তারা তাদের শত্রুদের যুদ্ধে পরাজিত করে সবকিছু লুট করে নিয়ে যেত বলে এ মাসের নাম সফর।
| ২ || [[সফর]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|صفر}} || রিক্ত, শূন্য, ভ্রমণ || এ মাসের এরূপ নামকরণের কারণ সম্ভবত এটি যে, প্রাক-ইসলামি যুগে আরবীয় ঘর-বাড়ি এই সময়ে শূন্য থাকতো যখন গৃহস্থরা খাবার সংগ্রহ করতো। অন্যমতে, তারা তাদের শত্রুদের যুদ্ধে পরাজিত করে সবকিছু লুট করে নিয়ে যেত বলে এ মাসের নাম সফর।
সফর শব্দের আরেকটি অর্থ হল ভ্রমণ। এ মর্মে সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত হলো,তৎকালীন আরবরা এ মাসে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বেশি ভ্রমণ করত বলে এ মাসের নাম রাখা হয়েছে সফর।
সফর শব্দের আরেকটি অর্থ হল ভ্রমণ। এ মর্মে সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত হলো,তৎকালীন আরবরা এ মাসে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বেশি ভ্রমণ করত বলে এ মাসের নাম রাখা হয়েছে সফর।
|-
|-
| ৩ || [[রবিউল আউয়াল]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ربيع الأولي}} || প্রথম বসন্ত || অন্য অর্থ চারণ, কেননা এই সময়ে গবাদি পশু চারণ করা হতো। মাসটি মুসলমানদের জন্য পবিত্র একটি মাস বলে বিবেচিত কারণ [[মুহাম্মাদ]] এই মাসে জন্মগ্রহণ করেন।
| ৩ || [[রবিউল আউয়াল]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ربيع الأولي}} || প্রথম বসন্ত || অন্য অর্থ চারণ, কেননা এই সময়ে গবাদি পশু চারণ করা হতো। মাসটি মুসলিমদের জন্য পবিত্র একটি মাস বলে বিবেচিত কারণ [[মুহাম্মাদ]] এই মাসে জন্মগ্রহণ করেন।
|-
|-
| ৪ || [[রবিউস সানি]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ربيع الاخري}} || দ্বিতীয় বসন্ত ||
| ৪ || [[রবিউস সানি]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ربيع الاخري}} || দ্বিতীয় বসন্ত ||
|-
|-
| ৫ || [[জমাদিউল আউয়াল]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|جمادى الأولی}} || প্রথম শুকনো ভূমিখণ্ড || প্রাক-ইসলামিক গ্রীষ্মকাল হিসেবে বিবেচিত।
| ৫ || [[জমাদিউল আউয়াল]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|جمادى الأولی}} || প্রথম শুকনো ভূমিখণ্ড || প্রাক-ইসলামি গ্রীষ্মকাল হিসেবে বিবেচিত।
|-
|-
| ৬ || [[জমাদিউস সানি]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|جمادي الآخر ي}} || দ্বিতীয় শুকনো ভূমিখণ্ড ||
| ৬ || [[জমাদিউস সানি]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|جمادي الآخر ي}} || দ্বিতীয় শুকনো ভূমিখণ্ড ||
|-
|-
| ৭ || [[রজব]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|رجب}} || শ্রদ্ধা, সম্মান || এটি আরবি বছরের দ্বিতীয় মাস যখন যুদ্ধ নিষিদ্ধ। 'রজব' শব্দের অন্য অর্থ 'সরিয়ে নেওয়া'। কেননা প্রাক-ইসলামিক যুগে আরবরা এ মাসে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার জন্য বর্শার মাথা সরিয়ে রাখতো।
| ৭ || [[রজব]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|رجب}} || শ্রদ্ধা, সম্মান || এটি আরবি বছরের দ্বিতীয় মাস যখন যুদ্ধ নিষিদ্ধ। 'রজব' শব্দের অন্য অর্থ 'সরিয়ে নেওয়া'। কেননা প্রাক-ইসলামি যুগে আরবরা এ মাসে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার জন্য বর্শার মাথা সরিয়ে রাখতো।
|-
|-
| ৮ || [[শা'বান]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|شعبان}} || বিক্ষিপ্ত || এর নামকরণের সম্ভাব্য কারণ এ মাসের পানির অভাব। তৎকালীন আরবেরা এ মাসে পানির সন্ধানে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তো। তাই এর নাম 'শাবান'। এর অন্য অর্থ দুইয়ের মাঝামাঝি, কেননা এটি [[রজব]] এবং [[রমজান]] মাসের মাঝখানে।
| ৮ || [[শা'বান]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|شعبان}} || বিক্ষিপ্ত || এর নামকরণের সম্ভাব্য কারণ এ মাসের পানির অভাব। তৎকালীন আরবেরা এ মাসে পানির সন্ধানে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তো। তাই এর নাম 'শাবান'। এর অন্য অর্থ দুইয়ের মাঝামাঝি, কেননা এটি [[রজব]] এবং [[রমজান]] মাসের মাঝখানে।
|-
|-
| ৯ || [[রমজান (মাস)|রমজান]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|رمضان}} || দহন || দহন বলতে উপবাস বা [[রোজা|রোজাকে]] বোঝানো হয়েছে, কেননা উপবাস বা রোজার মাধ্যমে ব্যক্তির পার্থিব লালসা দগ্ধ হয়। রমজান মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র মাস। মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী এ মাসে পবিত্র [[কুরআন]] নাজিলের সূচনা হয়। এ মাসে মুসলমানদেরকে সুবহে সাদিক(শেষরাত) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বাধ্যতামূলক রোজা রাখতে হয়।
| ৯ || [[রমজান (মাস)|রমজান]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|رمضان}} || দহন || দহন বলতে উপবাস বা [[রোজা|রোজাকে]] বোঝানো হয়েছে, কেননা উপবাস বা রোজার মাধ্যমে ব্যক্তির পার্থিব লালসা দগ্ধ হয়। রমজান মুসলিমদের অন্যতম পবিত্র মাস। মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী এ মাসে পবিত্র [[কুরআন]] নাজিলের সূচনা হয়। এ মাসে মুসলিমদেরকে সুবহে সাদিক(শেষরাত) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বাধ্যতামূলক রোজা রাখতে হয়।
|-
|-
| ১০ || [[শাওয়াল]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|شوّال}} || উত্থিত || এ নামের কারণ এই সময়ে স্ত্রী-[[উট]] বাচ্চা প্রসব করে এবং লেজ উত্থিত করে।
| ১০ || [[শাওয়াল]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|شوّال}} || উত্থিত || এ নামের কারণ এই সময়ে স্ত্রী-[[উট]] বাচ্চা প্রসব করে এবং লেজ উত্থিত করে।
৯০ নং লাইন: ৯০ নং লাইন:
| ১১ || [[জ্বিলকদ]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ذو القعدة}} || সাময়িক যুদ্ধবিরতির মাস || এ মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ, তবে আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষা বৈধ।
| ১১ || [[জ্বিলকদ]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ذو القعدة}} || সাময়িক যুদ্ধবিরতির মাস || এ মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ, তবে আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষা বৈধ।
|-
|-
| ১২ || [[জ্বিলহজ্জ]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ذو الحجة}} || [[হজ্জ|হজ্জের]] মাস || এই মাসে মুসলমানরা [[মক্কা|মক্কায়]] [[কাবা শরিফ|কাবার]] উদ্দেশ্যে হজ্জ করতে যায়। এ মাসের ৮, ৯ ও ১০ তারিখে [[হজ্জ]] হয়। [[ঈদুল আযহা]] এই মাসের ১০ তারিখে শুরু হয় এবং ১২ তারিখ সূর্যাস্তের সাথে সাথে শেষ হয়। এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ।
| ১২ || [[জ্বিলহজ্জ]] || style=''direction:rtl;'' | {{lang|ar|ذو الحجة}} || [[হজ্জ|হজ্জের]] মাস || এই মাসে মুসলিমরা [[মক্কা]]য় [[কাবা শরিফ|কাবার]] উদ্দেশ্যে হজ্জ করতে যায়। এ মাসের ৮, ৯ ও ১০ তারিখে [[হজ্জ]] হয়। [[ঈদুল আযহা]] এই মাসের ১০ তারিখে শুরু হয় এবং ১২ তারিখ সূর্যাস্তের সাথে সাথে শেষ হয়। এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ।
|}
|}
===মাসের দৈর্ঘ্য===
=== মাসের দৈর্ঘ্য ===
ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রতিটি মাস নতুন চন্দ্র চক্রের আগমনের সাথে সাথে শুরু হয়। ঐতিহ্যগতভাবে, এটি চাঁদের অর্ধচন্দ্রের (''[[wikt:hilal#Noun|হেলাল]]'') প্রকৃত পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে পূর্ববর্তী চন্দ্রচক্রের তথা পূর্ববর্তী মাসের সমাপ্তি চিহ্নিত করে এর ফলে নতুন মাস শুরু হয়। ফলস্বরূপ চাঁদের দৃশ্যমানতা, পৃথিবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় অবস্থান ও আবহাওয়ার অবস্থার উপর নির্ভর করে প্রতি মাসে ২৯ বা ৩০ দিন থাকতে পারে। যদিও কিছু গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়, বিশেষত [[আলাভি বোহরা|আলাভি]], [[দায়ূদী বোহরা|দায়ূদী]] এবং [[সুলেইমানি]] ও [[শিয়া]] [[ইসমাইলি]] মুসলিমরা এক ধরনের সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি (নিচের অনুচ্ছেদ দেখুন) ব্যবহার করে যেখানে বিজোড়-সংখ্যার মাসে ত্রিশ দিন থাকে (ও একটি অধিবর্ষে দ্বাদশ মাসও) এবং জোড় মাসে ২৯টি দিন থাকে।
ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রতিটি মাস নতুন চন্দ্র চক্রের আগমনের সাথে সাথে শুরু হয়। ঐতিহ্যগতভাবে, এটি চাঁদের অর্ধচন্দ্রের (''[[wikt:hilal#Noun|হেলাল]]'') প্রকৃত পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে পূর্ববর্তী চন্দ্রচক্রের তথা পূর্ববর্তী মাসের সমাপ্তি চিহ্নিত করে এর ফলে নতুন মাস শুরু হয়। ফলস্বরূপ চাঁদের দৃশ্যমানতা, পৃথিবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় অবস্থান ও আবহাওয়ার অবস্থার উপর নির্ভর করে প্রতি মাসে ২৯ বা ৩০ দিন থাকতে পারে। যদিও কিছু গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়, বিশেষত [[আলাভি বোহরা|আলাভি]], [[দায়ূদী বোহরা|দায়ূদী]] এবং [[সুলেইমানি]] ও [[শিয়া]] [[ইসমাইলি]] মুসলিমরা এক ধরনের সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি (নিচের অনুচ্ছেদ দেখুন) ব্যবহার করে যেখানে বিজোড়-সংখ্যার মাসে ত্রিশ দিন থাকে (ও একটি অধিবর্ষে দ্বাদশ মাসও) এবং জোড় মাসে ২৯টি দিন থাকে।


==বর্ষ সংখ্যায়ন==
== বর্ষ সংখ্যায়ন ==
{{মূল নিবন্ধ|হিজরি সন}}
{{মূল নিবন্ধ|হিজরি সন}}
প্রাক-ইসলামি আরবে একটি বড় ঘটনা ঘটার বছরটি তার নামে চিহ্নিত করার প্রথা ছিল। সুতরাং ইসলামি ঐতিহ্য অনুযায়ী খ্রিস্টীয় [[আকসুম রাজ্য|আকসুম রাজ্যের]] ([[ইথিওপিয়া]]) প্রদেশ ইয়েমেনের প্রদেশপতি [[আবরাহা]] হাতি বিশিষ্ট বাহিনী দিয়ে [[কাবা]] ধ্বংসের চেষ্টা করেছিলেন যা ব্যর্থ হয়েছিল, কিন্তু সেই বছরটি [[হস্তিবর্ষ]] নামে পরিচিত হয় যে বছরে মুহাম্মাদ জন্মেছিলেন ([[সূরা ফীল]])। বেশিরভাগই এই বছরটিকে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের সমতুল্য মনে করে, কিন্তু কিছু ব্যক্তি ৫৭১ খ্রিস্টাব্দ ব্যবহার করে।
প্রাক-ইসলামি আরবে একটি বড় ঘটনা ঘটার বছরটি তার নামে চিহ্নিত করার প্রথা ছিল। সুতরাং ইসলামি ঐতিহ্য অনুযায়ী খ্রিস্টীয় [[আকসুম রাজ্য|আকসুম রাজ্যের]] ([[ইথিওপিয়া]]) প্রদেশ ইয়েমেনের প্রদেশপতি [[আবরাহা]] হাতি বিশিষ্ট বাহিনী দিয়ে [[কাবা]] ধ্বংসের চেষ্টা করেছিলেন যা ব্যর্থ হয়েছিল, কিন্তু সেই বছরটি [[হস্তিবর্ষ]] নামে পরিচিত হয় যে বছরে মুহাম্মাদ জন্মেছিলেন ([[সূরা ফীল]])। বেশিরভাগই এই বছরটিকে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের সমতুল্য মনে করে, কিন্তু কিছু ব্যক্তি ৫৭১ খ্রিস্টাব্দ ব্যবহার করে।
১১৩ নং লাইন: ১১৩ নং লাইন:
১৭ হিজরি সনে (৬৩৮ খ্রিস্টাব্দ), [[বসরা]]য় নিযুক্ত [[খলিফা]] [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমরের]] একজন কর্মকতা [[আবু মুসা আশয়ারী]] উমরের কাছ থেকে প্রাপ্ত চিঠিপত্রে বছরের অনুপস্থিতির অভিযোগ করেছিলেন ও কোন নির্দেশাবলী বর্তমান বছরের তা নির্ধারণ করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। এই প্রতিবেদনটি উমরকে মুসলিমদের জন্য একটি পঞ্জিকা সাল প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছিল। পরামর্শদাতাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে প্রথম বছরটি হতে হবে মুহাম্মদের মদিনায় আগমনের বছর (যা মুহাম্মদের আগমনের আগে ইয়াসরিব নামে পরিচিত ছিল)।<ref>{{Citation|last1=Tillier|first1=Mathieu|title=Recording debts in Sufyānid Fusṭāṭ: a reexamination of the procedures and calendar in use in the first/seventh century 1|date=2019-04-11|work=Geneses|pages=148–188|place=First [edition]. {{!}} New York : Routledge, 2019.|publisher=Routledge|isbn=978-1-351-11331-1|last2=Vanthieghem|first2=Naïm|doi=10.4324/9781351113311-8|s2cid=167115664|url=https://halshs.archives-ouvertes.fr/halshs-02308264/file/Tillier-Vanthieghem-Recording%20debts-DEF.pdf}}</ref> এরপর [[উসমান ইবন আফফান]] প্রাক-ইসলামি যুগের আরব্য রীতি মেনে বছরের প্রথম মাস মুহররমে শুরু করার পরামর্শ দেন। ইসলামি বর্ষপঞ্জির বছরগুলি এভাবে মুহররম মাস থেক্র মুহাম্মাদের মদিনা শহরে আগমনের বছর থেকে শুরু হয়, যদিও প্রকৃত হিজরত হয়েছিল আন্তঃকালিত বর্ষপঞ্জির সফর ও রবিউল আউয়াল মাসে তথা নতুন স্থির বর্ষপঞ্জির মুহররম শুরু হওয়ার দুই মাস আগে।<ref name="WH"/> হিজরতের কারণে এই বর্ষপঞ্জির নামকরণ করা হয় হিজরি বর্ষপঞ্জি।
১৭ হিজরি সনে (৬৩৮ খ্রিস্টাব্দ), [[বসরা]]য় নিযুক্ত [[খলিফা]] [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমরের]] একজন কর্মকতা [[আবু মুসা আশয়ারী]] উমরের কাছ থেকে প্রাপ্ত চিঠিপত্রে বছরের অনুপস্থিতির অভিযোগ করেছিলেন ও কোন নির্দেশাবলী বর্তমান বছরের তা নির্ধারণ করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। এই প্রতিবেদনটি উমরকে মুসলিমদের জন্য একটি পঞ্জিকা সাল প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছিল। পরামর্শদাতাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে প্রথম বছরটি হতে হবে মুহাম্মদের মদিনায় আগমনের বছর (যা মুহাম্মদের আগমনের আগে ইয়াসরিব নামে পরিচিত ছিল)।<ref>{{Citation|last1=Tillier|first1=Mathieu|title=Recording debts in Sufyānid Fusṭāṭ: a reexamination of the procedures and calendar in use in the first/seventh century 1|date=2019-04-11|work=Geneses|pages=148–188|place=First [edition]. {{!}} New York : Routledge, 2019.|publisher=Routledge|isbn=978-1-351-11331-1|last2=Vanthieghem|first2=Naïm|doi=10.4324/9781351113311-8|s2cid=167115664|url=https://halshs.archives-ouvertes.fr/halshs-02308264/file/Tillier-Vanthieghem-Recording%20debts-DEF.pdf}}</ref> এরপর [[উসমান ইবন আফফান]] প্রাক-ইসলামি যুগের আরব্য রীতি মেনে বছরের প্রথম মাস মুহররমে শুরু করার পরামর্শ দেন। ইসলামি বর্ষপঞ্জির বছরগুলি এভাবে মুহররম মাস থেক্র মুহাম্মাদের মদিনা শহরে আগমনের বছর থেকে শুরু হয়, যদিও প্রকৃত হিজরত হয়েছিল আন্তঃকালিত বর্ষপঞ্জির সফর ও রবিউল আউয়াল মাসে তথা নতুন স্থির বর্ষপঞ্জির মুহররম শুরু হওয়ার দুই মাস আগে।<ref name="WH"/> হিজরতের কারণে এই বর্ষপঞ্জির নামকরণ করা হয় হিজরি বর্ষপঞ্জি।


এফ.এ. শামসি (১৯৮৪) দাবি করেছেন যে আরবি বর্ষপঞ্জি কখনো আন্তঃকালিত ছিল না। তার মতে নতুন স্থির ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাসের প্রথম দিন (১ মুহররম ১ হিজরি সন) আগের বর্ষপঞ্জি থেকে ভিন্ন ছিলো না। প্রকৃত প্রাক-ইসলামি আরবীয় বর্ষপঞ্জিতে যে তারিখে নবি কুবা থেকে মদিনায় গমন করেছিলেন তা ছিল ২৬ রবিউল আউয়াল।<ref>''Chronology of Prophetic Events'', Fazlur Rehman Shaikh (2001) p.52 Ta-Ha Publishers Ltd.</ref> নতুন স্থির বর্ষপঞ্জির ১ মুহাররম শুক্রবার, [[জুলীয় বর্ষপঞ্জি]]র ১৬ জুলাই ৬২২ খ্রিস্টাব্দ তারিখের সমতুল্য দেওয়ানী সারণী তারিখ (একই দিবালোক সময়কাল) এর সাথে মিলে যায়।<ref>Sherrard Beaumont Burnaby, [https://archive.org/details/elementsofjewish00burnuoft ''Elements of the Jewish and Muhammadan calendars''] (1901) pp. 373–5, 382–4.</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://emr.cs.iit.edu/home/reingold/calendar-book/Calendrica.html |শিরোনাম=Calendrica |ইউআরএল-অবস্থা=dead |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20050216102054/http://emr.cs.iit.edu/home/reingold/calendar-book/Calendrica.html |আর্কাইভের-তারিখ=16 February 2005 }}</ref> ইসলামি দিনটি ১৫ জুলাই সূর্যাস্তের পূর্বে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়। জুলীয় তারিখটি (১৬ জুলাই) [[মধ্যযুগীয় ইসলামে জ্যোতির্বিজ্ঞান|মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা]] তাদের নিজস্ব [[সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি]]র ছাঁচে ফেলে নির্ধারণ করেন যাতে প্রতি চন্দ্র বছরে ৩০ ও ২৯-দিনের মাস এবং প্রতি ৩০ বছরে এগারোটি অধিক দিবস ছিল।
এফ.এ. শামসি (১৯৮৪) দাবি করেছেন যে আরবি বর্ষপঞ্জি কখনো আন্তঃকালিত ছিল না। তার মতে নতুন স্থির ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাসের প্রথম দিন (১ মুহররম ১ হিজরি সন) আগের বর্ষপঞ্জি থেকে ভিন্ন ছিলো না। প্রকৃত প্রাক-ইসলামি আরবীয় বর্ষপঞ্জিতে যে তারিখে নবি কুবা থেকে মদিনায় গমন করেছিলেন তা ছিল ২৬ রবিউল আউয়াল।<ref>''Chronology of Prophetic Events'', Fazlur Rehman Shaikh (2001) p.52 Ta-Ha Publishers Ltd.</ref> নতুন স্থির বর্ষপঞ্জির ১ মুহাররম শুক্রবার, [[জুলীয় বর্ষপঞ্জি]]র ১৬ জুলাই ৬২২ খ্রিস্টাব্দ তারিখের সমতুল্য দেওয়ানী সারণী তারিখ (একই দিবালোক সময়কাল) এর সাথে মিলে যায়।<ref>Sherrard Beaumont Burnaby, [https://archive.org/details/elementsofjewish00burnuoft ''Elements of the Jewish and Muhammadan calendars''] (1901) pp. 373–5, 382–4.</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://emr.cs.iit.edu/home/reingold/calendar-book/Calendrica.html |শিরোনাম=Calendrica |ইউআরএল-অবস্থা=dead |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20050216102054/http://emr.cs.iit.edu/home/reingold/calendar-book/Calendrica.html |আর্কাইভের-তারিখ=16 February 2005 }}</ref> ইসলামি দিনটি ১৫ জুলাই সূর্যাস্তের পূর্বে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়। জুলীয় তারিখটি (১৬ জুলাই) [[মধ্যযুগীয় ইসলামে জ্যোতির্বিজ্ঞান|মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা]] তাদের নিজস্ব [[সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি]]র ছাঁচে ফেলে নির্ধারণ করেন যাতে প্রতি চন্দ্র বছরে ৩০ ও ২৯-দিনের মাস এবং প্রতি ৩০ বছরে এগারোটি অধিক দিবস ছিল।
উদাহরণস্বরূপ, আল-বিরুনি এই জুলীয় তারিখটি ১০০০ খ্রিস্টাব্দে উল্লেখ করেছেন।<ref>al-Biruni, ''The chronology of ancient nations'', tr. [[C. Edward Sachau]] (1000/1879) 327.</ref> যদিও মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী বা আধুনিক পণ্ডিতরা ইসলামি সাল নির্ধারণের জন্য এটি ব্যবহার না করলেও চিকন [[অর্ধচন্দ্র]] ১৫ জুলাইতে সন্ধ্যার পূর্ববর্তী সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরেই প্রথম দৃশ্যমান হবে (ধরে নিচ্ছি মেঘ চাঁদকে অস্পষ্ট করেনি) যা ১.৫ দিন পরে ১৪ জুলাই সকালে সম্পর্কিত [[কালো চাঁদ]] (জ্যোতির্বিদ্যা [[নতুন চাঁদ]]) এর পরে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://eclipse.gsfc.nasa.gov/phase/phases0601.html|শিরোনাম=NASA phases of the moon 601–700|ইউআরএল-অবস্থা=dead|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20101008214455/http://eclipse.gsfc.nasa.gov/phase/phases0601.html|আর্কাইভের-তারিখ=8 October 2010}}</ref>
উদাহরণস্বরূপ, আল-বিরুনি এই জুলীয় তারিখটি ১০০০ খ্রিস্টাব্দে উল্লেখ করেছেন।<ref>al-Biruni, ''The chronology of ancient nations'', tr. [[C. Edward Sachau]] (1000/1879) 327.</ref> যদিও মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী বা আধুনিক পণ্ডিতরা ইসলামি সাল নির্ধারণের জন্য এটি ব্যবহার না করলেও চিকন [[অর্ধচন্দ্র]] ১৫ জুলাইতে সন্ধ্যার পূর্ববর্তী সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরেই প্রথম দৃশ্যমান হবে (ধরে নিচ্ছি মেঘ চাঁদকে অস্পষ্ট করেনি) যা ১.৫ দিন পরে ১৪ জুলাই সকালে সম্পর্কিত [[কালো চাঁদ]] (জ্যোতির্বিদ্যা [[নতুন চাঁদ]]) এর পরে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://eclipse.gsfc.nasa.gov/phase/phases0601.html|শিরোনাম=NASA phases of the moon 601–700|ইউআরএল-অবস্থা=dead|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20101008214455/http://eclipse.gsfc.nasa.gov/phase/phases0601.html|আর্কাইভের-তারিখ=8 October 2010}}</ref>


১২৩ নং লাইন: ১২৩ নং লাইন:
জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় চান্দ্র পঞ্জিকা পদ্ধতিতে ১২টি চান্দ্র মাসের একটি বছর ৩৫৪.৩৭ দিন দীর্ঘ। এই বর্ষপঞ্জি পদ্ধতিতে চন্দ্র মাসগুলি মাসিক "সংযোগ" এর সময় সুনির্দিষ্টভাবে শুরু হয় যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে সবচেয়ে সরাসরি অবস্থানে থাকে। এর মাসকে পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের প্রদক্ষিণ করার গড় সময়কাল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় (২৯.৫৩ দিন)। নিয়মানুযায়ী ৩০ দিন এবং ২৯ দিনের মাস একে অপরের সাথে পরপর দুই মাস যোগ হয়ে ৫৯ পূর্ণ দিনে পরিণত হয়। এটি শুধুমাত্র ৪৪ মিনিটের একটি ছোট মাসিক উদ্ধৃত রেখে দেয় যা ২.৭৩ বছরে জমতে জমতে মোট ২৪ ঘন্টা হয়ে (অর্থাৎ, একটি পূর্ণ দিনের সমতুল্য) যোগ হয়। হিসাব নিষ্পত্তি করার জন্য চন্দ্র বর্ষপঞ্জিতে প্রতি তিন বছরে একটি দিন যোগ করা যথেষ্ট, একইভাবে প্রতি চার বছরে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিতে একটি দিন যোগ করা হয়।<ref>Emile Biémont, Rythmes du temps, Astronomie et calendriers, De Borck, 2000, 393p.</ref> এই সামঞ্জস্যের প্রযুক্তিগত বিশদ বিবরণ [[সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি]]তে বর্ণনা করা হয়েছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় চান্দ্র পঞ্জিকা পদ্ধতিতে ১২টি চান্দ্র মাসের একটি বছর ৩৫৪.৩৭ দিন দীর্ঘ। এই বর্ষপঞ্জি পদ্ধতিতে চন্দ্র মাসগুলি মাসিক "সংযোগ" এর সময় সুনির্দিষ্টভাবে শুরু হয় যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে সবচেয়ে সরাসরি অবস্থানে থাকে। এর মাসকে পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের প্রদক্ষিণ করার গড় সময়কাল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় (২৯.৫৩ দিন)। নিয়মানুযায়ী ৩০ দিন এবং ২৯ দিনের মাস একে অপরের সাথে পরপর দুই মাস যোগ হয়ে ৫৯ পূর্ণ দিনে পরিণত হয়। এটি শুধুমাত্র ৪৪ মিনিটের একটি ছোট মাসিক উদ্ধৃত রেখে দেয় যা ২.৭৩ বছরে জমতে জমতে মোট ২৪ ঘন্টা হয়ে (অর্থাৎ, একটি পূর্ণ দিনের সমতুল্য) যোগ হয়। হিসাব নিষ্পত্তি করার জন্য চন্দ্র বর্ষপঞ্জিতে প্রতি তিন বছরে একটি দিন যোগ করা যথেষ্ট, একইভাবে প্রতি চার বছরে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিতে একটি দিন যোগ করা হয়।<ref>Emile Biémont, Rythmes du temps, Astronomie et calendriers, De Borck, 2000, 393p.</ref> এই সামঞ্জস্যের প্রযুক্তিগত বিশদ বিবরণ [[সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি]]তে বর্ণনা করা হয়েছে।


তবে ইসলামিক বর্ষপঞ্জি মাস শুরুর তারিখ নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন নিয়মের উপর ভিত্তি করে তৈরি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://tabsir.net/?p=633#more-633|শিরোনাম=tabsir.net}}</ref> প্রতি মাসে তবুও ২৯ বা ৩০ দিন থাকে, কিন্তু নিযুক্ত পর্যবেক্ষণের পরিবর্তনশীল পদ্ধতির কারণে সাধারণত ২৯ বা ৩০-দিনের মাসের দৈর্ঘ্যের ক্রমানুসারে কোনও স্পষ্ট ক্রম থাকে না। ঐতিহ্যগতভাবে প্রতি মাসের প্রথম দিনটি (সূর্যাস্তের সময় শুরু হয়) হেলাল (অর্ধচন্দ্র) প্রথম দেখার দিন থেকে শুরু হয়। যদি মাসের ২৯ তম দিনের পরপরই হেলাল পালন না করা যায় (হয় কারণ মেঘ হেলাল দেখা বাধা দেয় বা চাঁদ অস্ত যাওয়ার সময় পশ্চিম আকাশ তখনও খুব উজ্জ্বল থাকে), তাহলে সেই সূর্যাস্তের সময় শুরু হওয়ার দিনটি হবে ৩০ তারিখ। মুসলিম নেতাদের একটি কমিটির সামনে এক বা একাধিক বিশ্বস্ত লোককে সাক্ষ্য দিয়ে হেলালের দৃশ্য দেখাতে হবে। হিলাল যে দিনটি পালন করার দিনটি নির্ধারণ করা ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানে মুসলিমদের আগ্রহের প্রেরণা, যা বহু শতাব্দী ধরে ইসলামকে সেই বিজ্ঞানের অগ্রভাগে রেখেছিল। তারপরও উভয় চন্দ্র গণনা পদ্ধতিই চূড়ান্তভাবে চন্দ্রচক্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়ার কারণে উভয় ব্যবস্থাই একে অপরের সাথে মোটামুটিভাবে মিলে যায়, ফলে একে অপরের অবস্থানের সাথে মিলে যাওয়ার বাইরে কখনোই তিন দিনের বেশি হয় না।
তবে ইসলামি বর্ষপঞ্জি মাস শুরুর তারিখ নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন নিয়মের উপর ভিত্তি করে তৈরি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://tabsir.net/?p=633#more-633|শিরোনাম=tabsir.net}}</ref> প্রতি মাসে তবুও ২৯ বা ৩০ দিন থাকে, কিন্তু নিযুক্ত পর্যবেক্ষণের পরিবর্তনশীল পদ্ধতির কারণে সাধারণত ২৯ বা ৩০-দিনের মাসের দৈর্ঘ্যের ক্রমানুসারে কোনও স্পষ্ট ক্রম থাকে না। ঐতিহ্যগতভাবে প্রতি মাসের প্রথম দিনটি (সূর্যাস্তের সময় শুরু হয়) হেলাল (অর্ধচন্দ্র) প্রথম দেখার দিন থেকে শুরু হয়। যদি মাসের ২৯ তম দিনের পরপরই হেলাল পালন না করা যায় (হয় কারণ মেঘ হেলাল দেখা বাধা দেয় বা চাঁদ অস্ত যাওয়ার সময় পশ্চিম আকাশ তখনও খুব উজ্জ্বল থাকে), তাহলে সেই সূর্যাস্তের সময় শুরু হওয়ার দিনটি হবে ৩০ তারিখ। মুসলিম নেতাদের একটি কমিটির সামনে এক বা একাধিক বিশ্বস্ত লোককে সাক্ষ্য দিয়ে হেলালের দৃশ্য দেখাতে হবে। হিলাল যে দিনটি পালন করার দিনটি নির্ধারণ করা ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানে মুসলিমদের আগ্রহের প্রেরণা, যা বহু শতাব্দী ধরে ইসলামকে সেই বিজ্ঞানের অগ্রভাগে রেখেছিল। তারপরও উভয় চন্দ্র গণনা পদ্ধতিই চূড়ান্তভাবে চন্দ্রচক্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়ার কারণে উভয় ব্যবস্থাই একে অপরের সাথে মোটামুটিভাবে মিলে যায়, ফলে একে অপরের অবস্থানের সাথে মিলে যাওয়ার বাইরে কখনোই তিন দিনের বেশি হয় না।
[[File:استهلال ماه رمضان در شهر قم، عکاس مصطفی معراجی، بلندی های بوستان علوی قم 12.jpg|alt=একজন মানুষ আরেকজন দেখছেন, যিনি আধুনিক টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখছেন|thumb|ধর্মগুরুরা চাঁদ দেখছেন।]]
[[চিত্র:استهلال ماه رمضان در شهر قم، عکاس مصطفی معراجی، بلندی های بوستان علوی قم 12.jpg|alt=একজন মানুষ আরেকজন দেখছেন, যিনি আধুনিক টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখছেন|থাম্ব|ধর্মগুরুরা চাঁদ দেখছেন।]]


মাস শুরুর তারিখ নির্ধারণের এই ঐতিহ্যবাহী প্রথা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে অনুসরণ করা হয়। প্রতিটি ইসলামি রাষ্ট্র তার ভূখণ্ডে একটি নতুন মাসের শুরু ঘোষণা করার আগে নতুন চাঁদের নিজস্ব মাসিক পর্যবেক্ষণের জন্য প্রচেষ্টা চালায় (বা এটি ব্যর্থ হলে ৩০ দিন পূর্ণ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে)। কিন্তু অর্ধচন্দ্র সংযোজনের মাত্র ১৭ ঘন্টা পরে এবং শুধুমাত্র আবহাওয়া, সময়, ভৌগোলিক অবস্থান, সেইসাথে বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরামিতিগুলোর সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি অনুকূল অবস্থার অস্তিত্বের সাপেক্ষে দৃশ্যমান হয়।<ref>Karim Meziane et [[Nidhal Guessoum]]: La visibilité du croissant lunaire et le ramadan, La Recherche n° 316, janvier 1999, pp. 66–71.</ref> পশ্চিমা মুসলিম দেশগুলি চাঁদ পশ্চিমে যাওয়ার সাথে সাথে সূর্যের চেয়ে ক্রমশ দেরিতে অস্ত যায় এই সত্যের প্রেক্ষিতে অনুকূল পরিস্থিতিতে সংযোগের পর থেকে তার "বয়স"-এর অনুরূপ বৃদ্ধির সাথে পূর্ব মুসলিম দেশগুলির তুলনায় একদিন আগে নতুন চাঁদ দেখতে পারে। এই সমস্ত কারণের পারস্পরিক ক্রিয়াকলাপের ফলে প্রতিটি মাসের শুরু এক মুসলিম দেশ থেকে অন্য মুসলিম দেশভেদে সংযোজন পরবর্তী ৪৮-ঘণ্টার সময়কালে আলাদা হয়। কোনো দেশে বর্ষপঞ্জি দ্বারা প্রদত্ত তথ্য বর্তমান মাসের বাইরে প্রসারিত হয় না।
মাস শুরুর তারিখ নির্ধারণের এই ঐতিহ্যবাহী প্রথা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে অনুসরণ করা হয়। প্রতিটি ইসলামি রাষ্ট্র তার ভূখণ্ডে একটি নতুন মাসের শুরু ঘোষণা করার আগে নতুন চাঁদের নিজস্ব মাসিক পর্যবেক্ষণের জন্য প্রচেষ্টা চালায় (বা এটি ব্যর্থ হলে ৩০ দিন পূর্ণ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে)। কিন্তু অর্ধচন্দ্র সংযোজনের মাত্র ১৭ ঘন্টা পরে এবং শুধুমাত্র আবহাওয়া, সময়, ভৌগোলিক অবস্থান, সেইসাথে বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরামিতিগুলোর সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি অনুকূল অবস্থার অস্তিত্বের সাপেক্ষে দৃশ্যমান হয়।<ref>Karim Meziane et [[Nidhal Guessoum]]: La visibilité du croissant lunaire et le ramadan, La Recherche n° 316, janvier 1999, pp. 66–71.</ref> পশ্চিমা মুসলিম দেশগুলি চাঁদ পশ্চিমে যাওয়ার সাথে সাথে সূর্যের চেয়ে ক্রমশ দেরিতে অস্ত যায় এই সত্যের প্রেক্ষিতে অনুকূল পরিস্থিতিতে সংযোগের পর থেকে তার "বয়স"-এর অনুরূপ বৃদ্ধির সাথে পূর্ব মুসলিম দেশগুলির তুলনায় একদিন আগে নতুন চাঁদ দেখতে পারে। এই সমস্ত কারণের পারস্পরিক ক্রিয়াকলাপের ফলে প্রতিটি মাসের শুরু এক মুসলিম দেশ থেকে অন্য মুসলিম দেশভেদে সংযোজন পরবর্তী ৪৮-ঘণ্টার সময়কালে আলাদা হয়। কোনো দেশে বর্ষপঞ্জি দ্বারা প্রদত্ত তথ্য বর্তমান মাসের বাইরে প্রসারিত হয় না।


বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ মাসের শুরু নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন জ্যোতির্বিদ্যা-সম্পর্কিত নিয়ম প্রয়োগ করে এই অসুবিধাগুলির কিছু কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। এইভাবে [[মালয়েশিয়া]], [[ইন্দোনেশিয়া]], ও আরও কয়েকটি প্রতি মাসে সূর্যাস্তের প্রথম দিনে শুরু হয় যেদিন চাঁদ সূর্যের পরে অস্ত যায় (সূর্যাস্তের পরে চন্দ্রাস্ত)। মিশরে মাস শুরু হয় সূর্যাস্তের প্রথম দিনে যেদিন চাঁদ সূর্যের অন্তত পাঁচ মিনিট পরে অস্ত যায়। উপলব্ধ তথ্যগুলির একটি বিশদ বিশ্লেষণ দেখায় যে এই বিষয়ে দেশগুলি কি বলছে ও আসলে তারা কি করছে তার মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে৷ In কিছু দৃষ্টান্ত অনুযায়ী, একটি দেশ যা বলছে তা অসম্ভব।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.moonsighting.com/calculation-or-sighting.html|শিরোনাম=Calculations or Sighting for starting an Islamic month|ওয়েবসাইট=www.moonsighting.com|সংগ্রহের-তারিখ=16 April 2017|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20170508214424/http://www.moonsighting.com/calculation-or-sighting.html|আর্কাইভের-তারিখ=8 May 2017|ইউআরএল-অবস্থা=dead}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://oumma.com/Le-mois-islamique-est-il-universel|শিরোনাম=Le mois islamique est-il universel ou national ?|লেখক=Oumma|তারিখ=23 June 2010|কর্ম=Oumma}}</ref>
বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ মাসের শুরু নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন জ্যোতির্বিদ্যা-সম্পর্কিত নিয়ম প্রয়োগ করে এই অসুবিধাগুলির কিছু কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। এইভাবে [[মালয়েশিয়া]], [[ইন্দোনেশিয়া]], ও আরও কয়েকটি প্রতি মাসে সূর্যাস্তের প্রথম দিনে শুরু হয় যেদিন চাঁদ সূর্যের পরে অস্ত যায় (সূর্যাস্তের পরে চন্দ্রাস্ত)। মিশরে মাস শুরু হয় সূর্যাস্তের প্রথম দিনে যেদিন চাঁদ সূর্যের অন্তত পাঁচ মিনিট পরে অস্ত যায়। উপলব্ধ তথ্যগুলির একটি বিশদ বিশ্লেষণ দেখায় যে এই বিষয়ে দেশগুলি কি বলছে ও আসলে তারা কি করছে তার মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে৷ In কিছু দৃষ্টান্ত অনুযায়ী, একটি দেশ যা বলছে তা অসম্ভব।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.moonsighting.com/calculation-or-sighting.html|শিরোনাম=Calculations or Sighting for starting an Islamic month|ওয়েবসাইট=www.moonsighting.com|সংগ্রহের-তারিখ=16 April 2017|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20170508214424/http://www.moonsighting.com/calculation-or-sighting.html|আর্কাইভের-তারিখ=8 May 2017|ইউআরএল-অবস্থা=dead}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://oumma.com/Le-mois-islamique-est-il-universel|শিরোনাম=Le mois islamique est-il universel ou national ?|লেখক=Oumma|তারিখ=23 June 2010|কর্ম=Oumma}}</ref>
১৫১ নং লাইন: ১৫১ নং লাইন:


=== তুরস্কের ইসলামি বর্ষপঞ্জি ===
=== তুরস্কের ইসলামি বর্ষপঞ্জি ===
তুর্কি মুসলিমরা একটি ইসলামি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে যেখানে [[ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর, তুরস্ক|ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর]] ([[তুর্কি ভাষা|তুর্কি]]: Diyanet İşleri Başkanlığı) ভবিষ্যত কিছু মাসের হিসাব অগ্রীম করে রাখে। ১ মুহররম ১৪০০ হিজরি (২১ নভেম্বর ১৯৭৯) থেকে ২৯ জিলহজ্জ ১৪৩৫ (২৪ অক্টোবর ২০১৪) পর্যন্ত গণনাকৃত তুর্কি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি এই নিয়মে চলত: "চন্দ্র মাস সন্ধ্যায় শুরু হবে বলে ধরে নেওয়া হয়, যখন, স্থলজগতের কিছু অঞ্চলের মধ্যে, স্থানীয় সূর্যাস্তের সময় অর্ধচন্দ্রের গণনা করা কেন্দ্র স্থানীয় দিগন্ত থেকে ৫° এর বেশি এবং (ভূকেন্দ্রিকভাবে) সূর্য থেকে ৮° এর বেশি হবে।" বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী (হিসাবকৃত) সূর্যাস্তের সময় অর্ধচন্দ্রকে [[আঙ্কারা]]র স্থানীয় দিগন্তের উপরে থাকতে হবে।<ref name=turkey>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://webspace.science.uu.nl/~gent0113/islam/diyanetcalendar.htm |শিরোনাম=The Islamic Calendar of Turkey |কর্ম=[[Mathematical Institute]] |প্রকাশক=[[Utrecht University]] |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2021 |তারিখ=April 2021 |প্রথমাংশ=R.H. |শেষাংশ=van Gent}}</ref>
তুর্কি মুসলিমরা একটি ইসলামি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে যেখানে [[ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর, তুরস্ক|ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর]] ([[তুর্কি ভাষা|তুর্কি]]: Diyanet İşleri Başkanlığı) ভবিষ্যত কিছু মাসের হিসাব অগ্রীম করে রাখে। ১ মুহররম ১৪০০ হিজরি (২১ নভেম্বর ১৯৭৯) থেকে ২৯ জিলহজ্জ ১৪৩৫ (২৪ অক্টোবর ২০১৪) পর্যন্ত গণনাকৃত তুর্কি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি এই নিয়মে চলতো: "চন্দ্র মাস সন্ধ্যায় শুরু হবে বলে ধরে নেওয়া হয়, যখন, স্থলজগতের কিছু অঞ্চলের মধ্যে, স্থানীয় সূর্যাস্তের সময় অর্ধচন্দ্রের গণনা করা কেন্দ্র স্থানীয় দিগন্ত থেকে ৫° এর বেশি এবং (ভূকেন্দ্রিকভাবে) সূর্য থেকে ৮° এর বেশি হবে।" বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী (হিসাবকৃত) সূর্যাস্তের সময় অর্ধচন্দ্রকে [[আঙ্কারা]]র স্থানীয় দিগন্তের উপরে থাকতে হবে।<ref name=turkey>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://webspace.science.uu.nl/~gent0113/islam/diyanetcalendar.htm |শিরোনাম=The Islamic Calendar of Turkey |কর্ম=[[Mathematical Institute]] |প্রকাশক=[[Utrecht University]] |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2021 |তারিখ=April 2021 |প্রথমাংশ=R.H. |শেষাংশ=van Gent}}</ref>


=== সৌদি আরবের ''উম্ম আল-কুরা'' বর্ষপঞ্জি ===
=== সৌদি আরবের ''উম্ম আল-কুরা'' বর্ষপঞ্জি ===
১৬৬ নং লাইন: ১৬৬ নং লাইন:
২০০৭ সালে [[উত্তর আমেরিকার ইসলামি সমাজ]], উত্তর আমেরিকার ''ফিকহ'' পরিষদ এবং ইউরোপীয় ''[[ফতওয়া]]'' ও গবেষণা পরিষদ ঘোষণা করে যে তারা এখন থেকে এর উপর ভিত্তি করে একটি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করবে। সমস্ত চান্দ্র মাসের সূচনা (এবং সেইজন্য সমস্ত ধর্মীয় দিবসের সাথে যুক্ত দিনগুলি) নির্ধারণ করতে (আগে থেকেই) ''উম্ম আল-কুরা'' বর্ষপঞ্জির মতো একই প্যারামিটার ব্যবহার করে গণনা করা হবে। এটি ভবিষ্যতের কোনো সময়ে সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের বর্ষপঞ্জিকে একত্রিত করার পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অভিপ্রেত ছিল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://tabsir.net/?p=621#more-621 |ওয়েবসাইট=tabsir.net |শিরোনাম=Can the Umm al Qura calendar serve as a global Islamic calendar? |প্রথমাংশ=Khalid |শেষাংশ=Chraibi |তারিখ=23 July 2008 |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2022 |প্রকাশক=[[WordPress]]}}</ref>
২০০৭ সালে [[উত্তর আমেরিকার ইসলামি সমাজ]], উত্তর আমেরিকার ''ফিকহ'' পরিষদ এবং ইউরোপীয় ''[[ফতওয়া]]'' ও গবেষণা পরিষদ ঘোষণা করে যে তারা এখন থেকে এর উপর ভিত্তি করে একটি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করবে। সমস্ত চান্দ্র মাসের সূচনা (এবং সেইজন্য সমস্ত ধর্মীয় দিবসের সাথে যুক্ত দিনগুলি) নির্ধারণ করতে (আগে থেকেই) ''উম্ম আল-কুরা'' বর্ষপঞ্জির মতো একই প্যারামিটার ব্যবহার করে গণনা করা হবে। এটি ভবিষ্যতের কোনো সময়ে সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের বর্ষপঞ্জিকে একত্রিত করার পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অভিপ্রেত ছিল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://tabsir.net/?p=621#more-621 |ওয়েবসাইট=tabsir.net |শিরোনাম=Can the Umm al Qura calendar serve as a global Islamic calendar? |প্রথমাংশ=Khalid |শেষাংশ=Chraibi |তারিখ=23 July 2008 |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2022 |প্রকাশক=[[WordPress]]}}</ref>


১৪৩৮ হিজরি সন (১ অক্টোবর ২০১৬) থেকে সৌদি আরব ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ইসলামিক বর্ষপঞ্জির ব্যবহার বজায় রেখে<ref name=Economist171216>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://www.economist.com/news/middle-east-and-africa/21711938-hauling-saudi-arabia-21st-century-saudi-arabia-adopts-gregorian |শিরোনাম=The prince's time machine: Saudi Arabia adopts the Gregorian calendar |সংবাদপত্র=[[The Economist]] |তারিখ=17 December 2016 |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2022 |প্রকাশক=[[The Economist Newspaper Limited]]}}</ref> সরকারি কর্মচারীদের মাসিক বেতন প্রদানের জন্য (খরচ কমানোর পরিমাপ হিসাবে) [[গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি গ্রহণ|গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি গ্রহণ করেছে]]।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://www.anglican.ink/article/saudi-arabia-adopts-gregorian-calendar |শিরোনাম=Saudi Arabia adopts Gregorian calendar |তারিখ=8 October 2016 |প্রথমাংশ=George |শেষাংশ=Conger |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2022 |কর্ম=Anglican |প্রকাশক=[[WordPress]]}}</ref>
১৪৩৮ হিজরি সন (১ অক্টোবর ২০১৬) থেকে সৌদি আরব ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ইসলামি বর্ষপঞ্জির ব্যবহার বজায় রেখে<ref name=Economist171216>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://www.economist.com/news/middle-east-and-africa/21711938-hauling-saudi-arabia-21st-century-saudi-arabia-adopts-gregorian |শিরোনাম=The prince's time machine: Saudi Arabia adopts the Gregorian calendar |সংবাদপত্র=[[The Economist]] |তারিখ=17 December 2016 |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2022 |প্রকাশক=[[The Economist Newspaper Limited]]}}</ref> সরকারি কর্মচারীদের মাসিক বেতন প্রদানের জন্য (খরচ কমানোর পরিমাপ হিসাবে) [[গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি গ্রহণ|গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি গ্রহণ করেছে]]।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://www.anglican.ink/article/saudi-arabia-adopts-gregorian-calendar |শিরোনাম=Saudi Arabia adopts Gregorian calendar |তারিখ=8 October 2016 |প্রথমাংশ=George |শেষাংশ=Conger |সংগ্রহের-তারিখ=4 February 2022 |কর্ম=Anglican |প্রকাশক=[[WordPress]]}}</ref>


==ইসলামি সাল ব্যবহারকারী অন্যান্য বর্ষপঞ্জি==
== ইসলামি সাল ব্যবহারকারী অন্যান্য বর্ষপঞ্জি ==
[[সৌর হিজরি বর্ষপঞ্জি]] ইরান ও আফগানিস্তানে ব্যবহৃত একটি সৌর বর্ষপঞ্জি যার তারিখ [[হিজরত]] তথা ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদের মক্কা থেকে মদিনায় স্থানান্তরের দিন থেকে গণনা করা হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=Yxd3E-_AqSEC&q=shah+calendar+change&pg=PA13 |শিরোনাম=Persian Pilgrimages by Afshin Molavi |আইএসবিএন=9780393051193 |সংগ্রহের-তারিখ=2012-08-11|শেষাংশ১=Molavi |প্রথমাংশ১=Afshin |শেষাংশ২=Mawlawī |প্রথমাংশ২=Afšīn |বছর=2002 }}</ref>
[[সৌর হিজরি বর্ষপঞ্জি]] ইরান ও আফগানিস্তানে ব্যবহৃত একটি সৌর বর্ষপঞ্জি যার তারিখ [[হিজরত]] তথা ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদের মক্কা থেকে মদিনায় স্থানান্তরের দিন থেকে গণনা করা হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=Yxd3E-_AqSEC&q=shah+calendar+change&pg=PA13 |শিরোনাম=Persian Pilgrimages by Afshin Molavi |আইএসবিএন=9780393051193 |সংগ্রহের-তারিখ=2012-08-11|শেষাংশ১=Molavi |প্রথমাংশ১=Afshin |শেষাংশ২=Mawlawī |প্রথমাংশ২=Afšīn |বছর=2002 }}</ref>


== সারণীকৃত হিজরি বর্ষপঞ্জি ==
== সারণিকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি ==
{{মূল নিবন্ধ|সারণীকৃত হিজরি বর্ষপঞ্জি}}
{{মূল নিবন্ধ|সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি}}
সারণীকৃত হিজরি বর্ষপঞ্জি হল একটি নিয়ম ভিত্তিক ইসলামি বর্ষপঞ্জি যেখানে প্রতিটি মাস নির্ধারণে পর্যবেক্ষণ বা জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় হিসাবের পরিবর্তে গাণিতিক নিয়ম ব্যবহার করা হয়। এটাতে ৩৫৫ দিন বিশিষ্ট ১১টি [[অধিবর্ষ]] সহ ৩০ দিনের চক্র সমেত ৩৫৪ দিনের ১৯ বছর বিশিষ্ট চক্র ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি প্রায় ২,৫০০ সৌর বছর বা ২,৫৭০ চান্দ্র বছরে একদিনের জন্য নির্ভুল। এটি স্বল্প মেয়াদে প্রায় এক বা দুই দিন পর্যন্ত বিচ্যুত হয়।
সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি হল একটি নিয়ম ভিত্তিক ইসলামি বর্ষপঞ্জি যেখানে প্রতিটি মাস নির্ধারণে পর্যবেক্ষণ বা জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় হিসাবের পরিবর্তে গাণিতিক নিয়ম ব্যবহার করা হয়। এটাতে ৩৫৫ দিন বিশিষ্ট ১১টি [[অধিবর্ষ]] সহ ৩০ দিনের চক্র সমেত ৩৫৪ দিনের ১৯ বছর বিশিষ্ট চক্র ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি প্রায় ২,৫০০ সৌর বছর বা ২,৫৭০ চান্দ্র বছরে একদিনের জন্য নির্ভুল। এটি স্বল্প মেয়াদে প্রায় এক বা দুই দিন পর্যন্ত বিচ্যুত হয়।


===কুয়েতি অ্যালগরিদম===
=== কুয়েতি অ্যালগরিদম ===
{{মূল নিবন্ধ|সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি#কুয়েতি অ্যালগরিদম}}
{{মূল নিবন্ধ|সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি#কুয়েতি অ্যালগরিদম}}
[[মাইক্রোসফট]] সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জির একটি সংস্করণ "কুয়েতি অ্যালগরিদম" ব্যবহার করে,<ref>[https://webspace.science.uu.nl/~gent0113/islam/islam_tabcal.htm#kuwait The "Kuwaiti Algorithm"] (Robert van Gent).</ref> যা গ্রেগরীয় তারিখকে ইসলামি তারিখে রূপান্তর করতে সক্ষম। মাইক্রোসফট দাবি করে যে তাদের সংস্করণটি [[কুয়েত|কুয়েতের]] ঐতিহাসিক তথ্যের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যদিও এর সাথে একটি পরিচিত সারণীকৃত বর্ষপঞ্জির মিল রয়েছে।
[[মাইক্রোসফট]] সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জির একটি সংস্করণ "কুয়েতি অ্যালগরিদম" ব্যবহার করে,<ref>[https://webspace.science.uu.nl/~gent0113/islam/islam_tabcal.htm#kuwait The "Kuwaiti Algorithm"] (Robert van Gent).</ref> যা গ্রেগরীয় তারিখকে ইসলামি তারিখে রূপান্তর করতে সক্ষম। মাইক্রোসফট দাবি করে যে তাদের সংস্করণটি [[কুয়েত|কুয়েতের]] ঐতিহাসিক তথ্যের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যদিও এর সাথে একটি পরিচিত সারণীকৃত বর্ষপঞ্জির মিল রয়েছে।
১৮৯ নং লাইন: ১৮৯ নং লাইন:
* ১৫ শাবান: [[শবে বরাত|লাইলাতুল বরাত]], বা ক্ষমাপ্রার্থনার রাত। শিয়াদের জন্য এটি দ্বাদশ ইমাম [[মুহম্মদ আল-মাহদী]]র জন্মদিন।
* ১৫ শাবান: [[শবে বরাত|লাইলাতুল বরাত]], বা ক্ষমাপ্রার্থনার রাত। শিয়াদের জন্য এটি দ্বাদশ ইমাম [[মুহম্মদ আল-মাহদী]]র জন্মদিন।
* ১ রমজান: [[শিয়া]] [[ইসলামি নববর্ষ|নববর্ষ]]। রোজা রাখার প্রথম দিবস।
* ১ রমজান: [[শিয়া]] [[ইসলামি নববর্ষ|নববর্ষ]]। রোজা রাখার প্রথম দিবস।
* ২৭ রমজান: [[শবে কদর|কদরের রাত]]। সম্ভবত এই দিনে মুহাম্মাদ [[কুরআন|কুরআনের]] প্রথম আয়াত প্রাপ্ত হোন (ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় ১৭ রমজান)।
* ২৭ রমজান: সম্ভাব্য [[শবে কদর|কদরের রাত]] মুহাম্মাদ (স) [[কুরআন|কুরআনের]] সূরা আলাক্বের প্রথম আয়াত প্রাপ্ত হোন (ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় ১৭ রমজান)।
* রমজানের শেষ তিনদিন যার মাঝে কদরের রাত অন্তর্ভুক্ত।
* রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাত (২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯) এর মাঝে কদরের রাত অন্তর্ভুক্ত।
* ১ শাওয়াল: [[ঈদুল ফিতর]]।
* ১ শাওয়াল: [[ঈদুল ফিতর]]।
* ৮–১৩ জিলহজ্জ: [[হজ্জ]] তথা মক্কায় তীর্থযাত্রা।
* ৮–১৩ জিলহজ্জ: [[হজ্জ]] তথা মক্কায় তীর্থযাত্রা।
২০৩ নং লাইন: ২০৩ নং লাইন:


== ব্যবহার ==
== ব্যবহার ==
[[File:Inscription of years by A.H.&A.D. eras.jpg|thumb|250px|জেরুসালেমের পুরনো একটি লাইব্রেরির বেসরকারি ও হিজরি প্রতিষ্ঠার তারিখ]]
[[চিত্র:Inscription of years by A.H.&A.D. eras.jpg|থাম্ব|250px|জেরুসালেমের পুরনো একটি লাইব্রেরির বেসরকারি ও হিজরি প্রতিষ্ঠার তারিখ]]
বর্তমানে ইসলামি বর্ষপঞ্জি প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় এবং মুসলিম দেশগুলোতে ঘটনা ও নথিপত্রের তারিখ লিপিবদ্ধকরণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। খাঁটি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি হিসেবে এর বৈশিষ্ট্যের ফলে এটি কৃষিজ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়না এবং ঐতিহাসিকভাবে ইসলামি সম্প্রদায়গুলো এই উদ্দেশ্যে অন্য বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে এসেছে: [[মিশরীয় বর্ষপঞ্জি]] অতীতে ইসলামি দেশগুলোতে বহুলভাবে ব্যবহৃত হত, এবং [[ইরানি বর্ষপঞ্জি]]গুলো ও ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের [[রুমি বর্ষপঞ্জি|উসমানীয় বর্ষপঞ্জি]] (একটি পরিবর্তিত [[জুলীয় বর্ষপঞ্জি]]) এসব দেশগুলোতে কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হতো।{{citation needed|date=May 2016}} [[পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল]] ও [[ইরাক|ইরাকে]] [[ব্যাবিলনীয় বর্ষপঞ্জি]]র [[আরামীয় ভাষা|আরামীয়]] নামগুলো এখনো ধর্মনিরপেক্ষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।{{citation needed|date=May 2016}} [[মাগরেব]] অঞ্চলে গ্রামীণ বর্বর কৃষকেরা কৃষিজ উদ্দেশ্যে এখনো জুলীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে।<ref name="EB">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি |শেষাংশ১=Gast |প্রথমাংশ১=M. |শেষাংশ২=Delheur |প্রথমাংশ২=J. |শেষাংশ৩=E.B. |শিরোনাম=Calendrier |ইউআরএল=http://journals.openedition.org/encyclopedieberbere/2039 |সাময়িকী=Encyclopédie Berbère |বছর=1992 |সংখ্যা নং=11 |পাতাসমূহ=1713–1720 |প্রকাশক=OpenEdition |ডিওআই=10.4000/encyclopedieberbere.2039 |সংগ্রহের-তারিখ=5 July 2018 |ভাষা=fr|doi-access=free }}</ref> এসব স্থানীয় সৌর বর্ষপঞ্জির নাগরিক উদ্দেশ্যে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির নিকট-সর্বজনীন গ্রহণের ফলে গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে।{{citation needed|date=May 2016}} সৌদি আরব চন্দ্র ইসলামি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে।<ref>the start of each lunar month determined not ahead of time by astronomical calculation, but only after the crescent moon is sighted by the proper religious authorities. (source: [[#HT2009|Tripp, ''Culture Shock'', 2009]]: pp. 154–5).</ref> ইন্দোনেশিয়ায় [[জাভানীয় বর্ষপঞ্জি]] ইসলামি ও প্রাক ইসলামি [[ভারতীয় জাতীয় বর্ষপঞ্জি|শক বর্ষপঞ্জির]] উপাদান সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে।
বর্তমানে ইসলামি বর্ষপঞ্জি প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় এবং মুসলিম দেশগুলোতে ঘটনা ও নথিপত্রের তারিখ লিপিবদ্ধকরণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। খাঁটি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি হিসেবে এর বৈশিষ্ট্যের ফলে এটি কৃষিজ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়না এবং ঐতিহাসিকভাবে ইসলামি সম্প্রদায়গুলো এই উদ্দেশ্যে অন্য বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে এসেছে: [[মিশরীয় বর্ষপঞ্জি]] অতীতে ইসলামি দেশগুলোতে বহুলভাবে ব্যবহৃত হত, এবং [[ইরানি বর্ষপঞ্জি]]গুলো ও ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের [[রুমি বর্ষপঞ্জি|উসমানীয় বর্ষপঞ্জি]] (একটি পরিবর্তিত [[জুলীয় বর্ষপঞ্জি]]) এসব দেশগুলোতে কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হতো।{{citation needed|date=May 2016}} [[পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল]] ও [[ইরাক|ইরাকে]] [[ব্যাবিলনীয় বর্ষপঞ্জি]]র [[আরামীয় ভাষা|আরামীয়]] নামগুলো এখনো ধর্মনিরপেক্ষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।{{citation needed|date=May 2016}} [[মাগরেব]] অঞ্চলে গ্রামীণ বর্বর কৃষকেরা কৃষিজ উদ্দেশ্যে এখনো জুলীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে।<ref name="EB">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি |শেষাংশ১=Gast |প্রথমাংশ১=M. |শেষাংশ২=Delheur |প্রথমাংশ২=J. |শেষাংশ৩=E.B. |শিরোনাম=Calendrier |ইউআরএল=http://journals.openedition.org/encyclopedieberbere/2039 |সাময়িকী=Encyclopédie Berbère |বছর=1992 |সংখ্যা নং=11 |পাতাসমূহ=1713–1720 |প্রকাশক=OpenEdition |ডিওআই=10.4000/encyclopedieberbere.2039 |সংগ্রহের-তারিখ=5 July 2018 |ভাষা=fr|doi-access=free }}</ref> এসব স্থানীয় সৌর বর্ষপঞ্জির নাগরিক উদ্দেশ্যে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির নিকট-সর্বজনীন গ্রহণের ফলে গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে।{{citation needed|date=May 2016}} সৌদি আরব চন্দ্র ইসলামি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে।<ref>the start of each lunar month determined not ahead of time by astronomical calculation, but only after the crescent moon is sighted by the proper religious authorities. (source: [[#HT2009|Tripp, ''Culture Shock'', 2009]]: pp. 154–5).</ref> ইন্দোনেশিয়ায় [[জাভানীয় বর্ষপঞ্জি]] ইসলামি ও প্রাক ইসলামি [[ভারতীয় জাতীয় বর্ষপঞ্জি|শক বর্ষপঞ্জির]] উপাদান সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে।


ব্রিটিশ লেখক [[নিকোলাস হ্যাগার]] লিখেছেন যে [[লিবিয়া]]র নিয়ন্ত্রণ দখল করার পর [[মুয়াম্মর গাদ্দাফি]] ১ ডিসেম্বর ১৯৭৮ তারিখে "ঘোষণা করেন" যে "মুসলিম বর্ষপঞ্জি ৬২২ খ্রিস্টাব্দের হিজরতের বিপরীতে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নবি মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর থেকে শুরু হওয়া উচিত"। এই সিদ্ধান্ত দেশকে আদর্শ মুসলিম বর্ষপঞ্জি থেকে দশ সৌর বছর পিছিয়ে দেয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Hagger |প্রথমাংশ=Nicholas |শিরোনাম=The Libyan Revolution: Its Origins and Legacy |ইউআরএল=https://archive.org/details/libyanrevolution0000hagg |বছর=2009 |প্রকাশক=O Books |অবস্থান=Winchester, UK |পাতাসমূহ=[https://archive.org/details/libyanrevolution0000hagg/page/109 109]}}</ref> যদিও ২০০৬ সালের ''এনসাইক্লোপিডিয়া অফ দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড'' অনুযায়ী "গাদ্দাফির অনন্য লিবীয় বর্ষপঞ্জি তবু আরও বিভ্রান্তিকর যা নবির জন্ম থেকে, বা কখনো কখনো বছর গণনা করে। জুলাই ও আগস্ট মাস, যেগুলো [[জুলিয়াস সিজার|জুলিয়াস]] ও [[আউগুস্তুস|অগাস্টাস]] সিজারের নামে হয়েছে, সেগুলো এখন যথাক্রমে [[গামাল আবদেল নাসের|নাসের]] ও [[হানিবল]]।"<ref>''Encyclopedia of the Developing World'' (2007), volume 3, p. 1338.</ref> দেশে ২০০১-এর সফরে, মার্কিন রিপোর্টার [[নিল ম্যাকফারকুহার]] পর্যবেক্ষণ করেছেন, "লিবিয়ায় জীবন এতটাই অনুমান অযোগ্য ছিল যে সেখানকার লোকেরা এমনকি এটি কোন বছর ছিল তার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল না। আমার সফরের বছরটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩৬৯ সালের ছিল। কিন্তু মাত্র দুই বছর আগে লিবীয়রা ১৪২৯ সাল পর্যন্ত বসবাস করছিল। গণনা পরিবর্তিত হওয়ার দিনটির নাম কেউ বলতে পারেনি, বিশেষ করে যেহেতু দুজনেই খেলায় রয়ে গেছে। অনুষ্ঠান আয়োজকরা তাই এসব বাদ দিয়ে তাদের ঘোষণাপত্রের কোথাও ব্র‍্যাকেটে পশ্চিমা সাল রেখেছিলেন।"<ref name="MacFarquhar2010">{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Neil MacFarquhar|শিরোনাম=The Media Relations Department of Hizbollah Wishes You a Happy Birthday: Unexpected Encounters in the Changing Middle East|ইউআরএল={{Google books|gzQBfS5nkiAC|page=PA38|keywords=|text=|plainurl=yes}}|year=2010|প্রকাশক=ReadHowYouWant|আইএসবিএন=978-1-4587-6009-8}} pages 37–38.</ref>
ব্রিটিশ লেখক [[নিকোলাস হ্যাগার]] লিখেছেন যে [[লিবিয়া]]র নিয়ন্ত্রণ দখল করার পর [[মুয়াম্মর গাদ্দাফি]] ১ ডিসেম্বর ১৯৭৮ তারিখে "ঘোষণা করেন" যে "মুসলিম বর্ষপঞ্জি ৬২২ খ্রিস্টাব্দের হিজরতের বিপরীতে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নবি মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর থেকে শুরু হওয়া উচিত"। এই সিদ্ধান্ত দেশকে আদর্শ মুসলিম বর্ষপঞ্জি থেকে দশ সৌর বছর পিছিয়ে দেয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Hagger |প্রথমাংশ=Nicholas |শিরোনাম=The Libyan Revolution: Its Origins and Legacy |ইউআরএল=https://archive.org/details/libyanrevolution0000hagg |বছর=2009 |প্রকাশক=O Books |অবস্থান=Winchester, UK |পাতাসমূহ=[https://archive.org/details/libyanrevolution0000hagg/page/109 109]}}</ref> যদিও ২০০৬ সালের ''এনসাইক্লোপিডিয়া অফ দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড'' অনুযায়ী "গাদ্দাফির অনন্য লিবীয় বর্ষপঞ্জি তবু আরও বিভ্রান্তিকর যা নবির জন্ম থেকে, বা কখনো কখনো বছর গণনা করে। জুলাই ও আগস্ট মাস, যেগুলো [[জুলিয়াস সিজার|জুলিয়াস]] ও [[আউগুস্তুস|অগাস্টাস]] সিজারের নামে হয়েছে, সেগুলো এখন যথাক্রমে [[গামাল আবদেল নাসের|নাসের]] ও [[হানিবল]]।"<ref>''Encyclopedia of the Developing World'' (2007), volume 3, p. 1338.</ref> দেশে ২০০১-এর সফরে, মার্কিন রিপোর্টার [[নিল ম্যাকফারকুহার]] পর্যবেক্ষণ করেছেন, "লিবিয়ায় জীবন এতটাই অনুমান অযোগ্য ছিল যে সেখানকার লোকেরা এমনকি এটি কোন বছর ছিল তার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল না। আমার সফরের বছরটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩৬৯ সালের ছিল। কিন্তু মাত্র দুই বছর আগে লিবীয়রা ১৪২৯ সাল পর্যন্ত বসবাস করছিল। গণনা পরিবর্তিত হওয়ার দিনটির নাম কেউ বলতে পারেনি, বিশেষ করে যেহেতু দুজনেই খেলায় রয়ে গেছে। অনুষ্ঠান আয়োজকরা তাই এসব বাদ দিয়ে তাদের ঘোষণাপত্রের কোথাও ব্র‍্যাকেটে পশ্চিমা সাল রেখেছিলেন।"<ref name="MacFarquhar2010">{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Neil MacFarquhar|শিরোনাম=The Media Relations Department of Hizbollah Wishes You a Happy Birthday: Unexpected Encounters in the Changing Middle East|ইউআরএল={{Google books|gzQBfS5nkiAC|page=PA38|keywords=|text=|plainurl=yes}}|year=2010|প্রকাশক=ReadHowYouWant|আইএসবিএন=978-1-4587-6009-8}} pages 37–38.</ref>


==কম্পিউটার সমর্থন==
== কম্পিউটার সমর্থন ==
* ঐতিহ্যবাহী [[ভিজুয়াল বেসিক|ভিজুয়াল বেসিকের]] পরবর্তী সংস্করণগুলো হিজরি সমর্থিত, এছাড়াও [[.নেট ফ্রেমওয়ার্ক|ডট নেট ফ্রেমওয়ার্কে]] হিজরি সমর্থন করে।
* ঐতিহ্যবাহী [[ভিজুয়াল বেসিক|ভিজুয়াল বেসিকের]] পরবর্তী সংস্করণগুলো হিজরি সমর্থিত, এছাড়াও [[.নেট ফ্রেমওয়ার্ক|ডট নেট ফ্রেমওয়ার্কে]] হিজরি সমর্থন করে।
* [[জাভা সংস্করণসমূহের ইতিহাস|জাভা ৮]] প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে নতুন তারিখ ও সময় এপিআইতে ইসলামি বর্ষপঞ্জি সমর্থন করে।
* [[জাভা সংস্করণসমূহের ইতিহাস|জাভা ৮]] প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে নতুন তারিখ ও সময় এপিআইতে ইসলামি বর্ষপঞ্জি সমর্থন করে।


== আরো দেখুন ==
== আরও দেখুন ==
{{প্রবেশদ্বার|ইসলাম}}
{{প্রবেশদ্বার|ইসলাম|সময়}}
* [[সৌর হিজরি বর্ষপঞ্জি]]
* [[সৌর হিজরি বর্ষপঞ্জি]]
* [[প্রাক-ইসলামি আরবীয় বর্ষপঞ্জি]]
* [[প্রাক-ইসলামি আরবীয় বর্ষপঞ্জি]]
২২৫ নং লাইন: ২২৫ নং লাইন:
{{সূত্র তালিকা|২}}
{{সূত্র তালিকা|২}}


===টীকা===
=== টীকা ===
{{notelist}}
{{notelist}}


== বহিঃসংযোগ ==
== বহিঃসংযোগ ==
*{{cite Americana|short=1|wstitle=Hegira}} {{in lang|en}}
* {{cite Americana|short=1|wstitle=Hegira}} {{in lang|en}}
*[https://aau.ac.ae/en/blog/how-and-why-did-the-hijiri-calendar-begin#:~:text=The%20Hijri%20year%20consists%20of%2012%20months%3A%20Muharram%2C%20Safar%2C,da%20and%20Dhu%20Al%20Hijja. How and Why did the Hijiri Calendar Begin? ''Al-Ain University''] {{in lang|en}}
* [https://aau.ac.ae/en/blog/how-and-why-did-the-hijiri-calendar-begin#:~:text=The%20Hijri%20year%20consists%20of%2012%20months%3A%20Muharram%2C%20Safar%2C,da%20and%20Dhu%20Al%20Hijja. How and Why did the Hijiri Calendar Begin? ''Al-Ain University''] {{in lang|en}}
*[https://web.archive.org/web/20181222152856/http://www.math.nus.edu.sg/aslaksen/calendar/islamic.shtml#Rules Helmer Aslaksen The Islamic Calendar] {{in lang|en}}
* [https://web.archive.org/web/20181222152856/http://www.math.nus.edu.sg/aslaksen/calendar/islamic.shtml#Rules Helmer Aslaksen The Islamic Calendar] {{in lang|en}}
*[http://tabsir.net/?p=1901 Khalid Chraibi, The reform of the Islamic calendar: the terms of the debate, Tabsir.net, September 2012] {{in lang|en}}
* [http://tabsir.net/?p=1901 Khalid Chraibi, The reform of the Islamic calendar: the terms of the debate, Tabsir.net, September 2012] {{in lang|en}}
*{{cite EB1911 |wstitle=Calendar/Mahommedan Calendar |display=Mahommedan Calendar |volume=4 |pages=1001–1003 |short=1}} {{in lang|en}}
* {{cite EB1911 |wstitle=Calendar/Mahommedan Calendar |display=Mahommedan Calendar |volume=4 |pages=1001–1003 |short=1}} {{in lang|en}}


===মুক্ত উৎসের বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক===
=== মুক্ত উৎসের বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক ===
{{hatnote|চন্দ্র পর্যবেক্ষণের সুনির্দিষ্ট তথ্যাদির অভাবের কারণে বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারীগুলো সাধারণত [[সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি]]র উপর নির্ভর করে।}}
{{hatnote|চন্দ্র পর্যবেক্ষণের সুনির্দিষ্ট তথ্যাদির অভাবের কারণে বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারীগুলো সাধারণত [[সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি]]র উপর নির্ভর করে।}}
*{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Calendar Converter for Near East Historians|অনূদিত-শিরোনাম=নিকট প্রাচ্যের ঐতিহাসিকদের জন্য বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক |ইউআরএল=https://www.muqawwim.com/ | প্রথমাংশ=টি.এস. |শেষাংশ=বিয়ার্স|তারিখ=2018 |ওয়েবসাইট=muqawwim.com|ভাষা=en}}
* {{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Calendar Converter for Near East Historians|অনূদিত-শিরোনাম=নিকট প্রাচ্যের ঐতিহাসিকদের জন্য বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক |ইউআরএল=https://www.muqawwim.com/ | প্রথমাংশ=টি.এস. |শেষাংশ=বিয়ার্স|তারিখ=2018 |ওয়েবসাইট=muqawwim.com|ভাষা=en}}
*{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Calendar converter|অনূদিত-শিরোনাম=বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক |ইউআরএল=https://www.fourmilab.ch/documents/calendar/ |প্রথমাংশ=জন |শেষাংশ=ওয়াকার |লেখক-সংযোগ=জন ওয়াকার (প্রোগ্রামার) |ওয়েবসাইট=fourmilab.ch |তারিখ=September 2015|ভাষা=en}}
* {{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Calendar converter|অনূদিত-শিরোনাম=বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক |ইউআরএল=https://www.fourmilab.ch/documents/calendar/ |প্রথমাংশ=জন |শেষাংশ=ওয়াকার |লেখক-সংযোগ=জন ওয়াকার (প্রোগ্রামার) |ওয়েবসাইট=fourmilab.ch |তারিখ=September 2015|ভাষা=en}}


{{Islam topics |collapsed}}
{{Islam topics |collapsed}}

০৯:৫৭, ৫ জুলাই ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

১০ রজব ১৪২৮ হিজরি সন (২৪ জুলাই ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ) তারিখে বাদশাহ খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইস্যুকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি সিলমোহর

হিজরি বর্ষপঞ্জি (আরবি: ٱلتَّقْوِيم ٱلْهِجْرِيّ আত-তাকবিম আল-হিজরি), যা চান্দ্র হিজরি বর্ষপঞ্জি ও (ইংরেজিতে) ইসলামি, মুসলিম বা আরবীয় বর্ষপঞ্জি নামেও পরিচিত, হলো একটি চন্দ্র নির্ভর বর্ষপঞ্জি যার এক বছর ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিন বিশিষ্ট ১২টি চান্দ্র মাস নিয়ে গঠিত। এই বর্ষপঞ্জি ইসলামি ছুটির দিন ও অনুষ্ঠানের সঠিক দিবস নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন বার্ষিক রোজা রাখার সময়কালহজ্জ করার সঠিক তারিখ। প্রায় সব মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো যেখানে সাধারণ বর্ষপঞ্জি হিসেবে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহার হয়, অন্যদিকে পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও মেসোপটেমিয়ায় (ইরাক, সিরিয়া, জর্ডান, লেবাননফিলিস্তিন) সিরীয় মাসের নাম সমেত গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হয়।

ইসলামি বর্ষপঞ্জিতে হিজরি সন ব্যবহার করা হয় যার আদর্শ ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ইসলামি নববর্ষে নির্ধারিত হয়েছে।[] এই বছরে মুহাম্মাদ ও তার সাহাবিরা মক্কা থেকে মদিনায় স্থানান্তরিত হয়ে প্রথম মুসলিম সম্প্রদায় (উম্মাহ) প্রতিষ্ঠা করে, এই ঘটনাটিকে হিজরত নামে অভিহিত করা হয়। পশ্চিমে বিশ্বে এই সনের তারিখগুলোর পেছনে এএইচ (লাতিন: Anno Hegirae, "হিজরতের বছর") লেখা হয় যা খ্রিস্টীয় সাল (এডি), কমন এরা (সিই) এবং ইহুদি সাল (এএম) এগুলোর পশ্চিমা সংক্ষিপ্ত রূপের অনুরূপ। মুসলিম দেশগুলোতে একে কখনো ইংরেজিতে এইচ[] এর আরবি শব্দ (سَنَة هِجْرِيَّة থেকে, সংক্ষিপ্ত করে ھ) হিসেবে লেখা হয়ে থাকে। ইংরেজিতে হিজরতের আগের বছরকে বিএইচ ("হিজরতের পূর্বে") হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।[]

১০ আগস্ট ২০২১ (2021-08-10)-এর হিসাব অনুযায়ী, হিজরি সন হল ১৪৪৩[তারিখের তথ্য]গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিতে ১৪৪৩ হিজরি সন ১০ আগস্ট ২০২১ থেকে ২৮ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত।[][][]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

প্রাক-ইসলামি বর্ষপঞ্জি

[সম্পাদনা]

মধ্য আরবে, বিশেষত মক্কায় প্রাক-ইসলামি বর্ষপঞ্জির ব্যাপারে লিপিগত প্রমাণের অভাব রয়েছে তবে আব্বাসীয় যুগের মুসলিম লেখকদের লেখায় বিস্তারিত পাওয়া যায়। প্রাচীন দক্ষিণ আরবের শিলালিপিগুলো স্থানীয় বর্ষপঞ্জির একটি সংখ্যার ব্যবহার প্রকাশ করে। এই দক্ষিণ আরবীয় বর্ষপঞ্জিগুলো মাঝে অন্তত কিছু সৌরচান্দ্রিক ব্যবস্থা অনুসরণ করে। আল-বিরুনিআল-মাসুদী উভয় ধরনা করতেন যে প্রাচীন আরবরা মুসলিমদের মতো একই মাসের নাম ব্যবহার করত, যদিও তারা প্রাক-ইসলামি আরবদের দ্বারা ব্যবহৃত অন্যান্য মাসের নামও সংরক্ষণ করেছেন।[][কোনটি?]

ইসলামিক ঐতিহ্য এই ব্যাপারে একমত যে তিহামা, হেজাজ এবং নজদের আরবদের নিকট অনুমোদিত (হালাল) এবং নিষিদ্ধ (হারাম) মাসের মধ্যে দুটি ধরনের পার্থক্য ছিল।[] নিষিদ্ধ মাসগুলি ছিল চারটি মাস যেখানে যুদ্ধ নিষিদ্ধ থাকত, সেগুলো ছিল যথাক্রমে রজব এবং হজ্জের মৌসুমের চারপাশের তিনটি মাস, জিলক্বদ, জিলহজ্জ ও মুহাররম।[] নিষিদ্ধ মাসের অনুরূপ ধারণাটি প্রকোপিয়াস দ্বারাও প্রমাণিত হয়েছে, যেখানে তিনি একটি যুদ্ধবিগ্রহের বর্ণনা করেছেন যে, দ্বিতীয় আল-মুনজির নামক পূর্ব আরবের লাখমীয় শাসক ৫৪১ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মকালীন অয়নকালে দুই মাসের জন্য সম্মানিত হয়েছিল।[] যাইহোক, মুসলিম ঐতিহাসিকরা এই মাসগুলিকে একটি নির্দিষ্ট ঋতুর সাথে যুক্ত করেন না।[] কুরআন চারটি নিষিদ্ধ মাসকে নাসি' (আরবি: ٱلنَّسِيءআন-নাসি) এর সাথে যুক্ত করেছে , , নাসি একটি শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ "স্থগিত করা"।[] মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে, স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি কিনানাহ গোত্রের একজন ব্যক্তি যিনি কিনানার আল-কালামাস নামে পরিচিত এবং তার বংশধরদের দ্বারা পরিচালিত হত।[]

নাসি'র ধারণার বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রস্তাব করা হয়েছে।[] কিছু পণ্ডিত, উভয় মুসলিম[][১০] ও পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ,[][] মনে করেন যে মধ্য আরবে ব্যবহৃত প্রাক-ইসলামি বর্ষপঞ্জিটি ছিল আধুনিক ইসলামি বর্ষপঞ্জির অনুরূপ একটি সম্পূর্ণরূপে চন্দ্র বর্ষপঞ্জি। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, নাসি' মক্কার আরবদের প্রাক-ইসলামি অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত, যেখানে তারা একটি নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে নিষিদ্ধ মাসগুলির বণ্টন পরিবর্তন করবে বর্ষপঞ্জির হেরফের না করে। এই ব্যাখ্যাটি আরব ইতিহাসবিদ এবং অভিধানবিদদের দ্বারা সমর্থিত, যেমন ইবনে হিশাম, ইবনে মঞ্জুর, এবং কুরআনের ব্যাখ্যার সংকলন।[১১]

এটি একটি প্রারম্ভিক সাবাইয়ীয় শিলালিপি দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে, যেখানে যুদ্ধের কারণে একটি ধর্মীয় আচার "স্থগিত" (নাসি ) লেখা হয়েছে। এই শিলালিপির প্রেক্ষাপট অনুসারে, নাসি' ক্রিয়াপদের সাথে আন্তঃকালকরণের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, তবে শুধুমাত্র বর্ষপঞ্জির মধ্যেই চলমান ধর্মীয় ঘটনাগুলির সাথে তা সম্পৃক্ত। এই প্রাচীন শিলালিপি এবং কোরানের ধর্মীয় ধারণার মধ্যে সাদৃশ্য ইঙ্গিত করে যে অ-বর্ষপঞ্জির স্থগিতকরণও নাসি'- এর কোরানের অর্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।[] এইভাবে ইসলামের বিশ্বকোষের উপসংহারে বলা হয়েছে "[নাসি'] এর আরবি পদ্ধতি শুধুমাত্র মক্কার আশেপাশে হজ্জ ও এর সাথে সম্পর্কিত মেলাগুলিকে বছরের একটি উপযুক্ত মৌসুমে স্থানান্তরিত করার উদ্দেশ্যে করা হতে পারে। এটি সাধারণভাবে পালন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট বর্ষপঞ্জি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ছিল না।"[১২] "স্থির বর্ষপঞ্জি" শব্দটি দ্বারা সাধারণত অ-আন্তঃকালিত বর্ষপঞ্জিকে বোঝানো হয়।

অন্যান্যরা একমত যে এটি মূলত একটি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি ছিল, তবে পরামর্শ দেওয়া হয় যে হিজরতের প্রায় ২০০ বছর পূর্বে এটি একটি সৌরচান্দ্রিক বর্ষপঞ্জিতে রূপান্তরিত হয়েছিল যাতে সময়ে সময়ে একটি আন্তঃগণনাকৃত মাস যুক্ত করা হয় যাতে বছরের ঋতুতে তীর্থযাত্রা ঠিক রাখা যায় যখন পণ্যসামগ্রী সবচেয়ে বেশি বিক্রয় হত। এই ব্যাখ্যাটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতিষী এবং জ্যোতির্বিদ আবু মাশর আল-বালখি এবং পরবর্তীতে আল-বিরুনি,[১৩] আল-মাসুদী ও কিছু পশ্চিমা পণ্ডিত।[১৪] এই ব্যাখ্যাটি নাসি'কে "আন্তঃগণনা" (কাবিসা) এর আরবি শব্দের প্রতিশব্দ বলে মনে করে। আরবরা, আবু মাশর কর্তৃক উল্লিখিত একটি ব্যাখ্যা অনুসারে, ইহুদিদের কাছ থেকে এই ধরনের ধারণার কথা জানতে পেরেছিল।[][১৩][১৫] ইহুদি নাসি ছিলেন একজন আধিকারিক যিনি সিদ্ধান্ত নিতেম কখন ইহুদি বর্ষপঞ্জিতে অতিরিক্ত মাস যুক্ত করতে হবে।[১৬] কিছু সূত্র বলে যে আরবরা ইহুদিদের রীতি অনুসরণ করেছিল এবং উনিশ বছরের মধ্যে সাত মাস আন্তঃকালিত করেছিল, অন্যথায় তারা ২৪ বছরের মধ্যে নয় মাস পার করেছিল; তবে এই বিষয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে কোন ঐকমত্য নেই।[১৭]

নাসি নিষিদ্ধকরণ

[সম্পাদনা]
মুহাম্মাদের নাসিকে নিষিদ্ধ করার চিত্র। আল-বিরুনির গত শতাব্দীর অবশিষ্ট লক্ষণ-এর একটি সচিত্র অনুলিপি থেকে পাওয়া গেছে (১৪শ শতাব্দীর প্রথম দিকের ইলখানাতীয় পাণ্ডুলিপির ১৭শ শতাব্দীর অনুলিপি)।[১৮]

হিজরতের দশম বছরে কুরআনের (অধ্যায় ৯:৩৬-৩৭) লেখা অনুযায়ী মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বর "নাসির নিষেধাজ্ঞা" প্রকাশ করেছেন।

নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস গণনায় বারটি। এর মধ্যে বিশেষ রূপে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। অতএব তোমরা এ মাসগুলিতে (ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করে) নিজেদের ক্ষতি সাধন করনা, আর মুশরিকদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ করে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
নিশ্চয়ই এই (মাসগুলির) স্থানান্তর কুফরের মধ্যে আরও কুফরী বৃদ্ধি করা, যা দ্বারা কাফিরদেরকে পথভ্রষ্ট করা হয়। (তা এ রূপে যে) তারা সেই হারাম মাসকে কোন বছর হালাল করে নেয় এবং কোন বছর হারাম মনে করে, আল্লাহ যে মাসগুলিকে হারাম করেছেন, যেন তারা ওগুলির সংখ্যা পূর্ণ করে নিতে পারে, অতঃপর তারা আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলিকে হালাল করে নেয়, তাদের দুস্কর্মগুলি তাদের কাছে শোভনীয় মনে হয়, আর আল্লাহ এইরূপ কাফিরদেরকে হিদায়াত (এর তাওফীক দান) করেননা।

নাসি'র নিষেধাজ্ঞা সম্ভবত তখন ঘোষণা করা হয়েছিল যখন আন্তঃগণনাকৃত মাসটি নাসি মাস শুরু হওয়ার ঠিক আগে তার অবস্থানে ফিরে এসেছিল। যদি নাসি'র অর্থ আন্তঃকালকরণ, তাহলে ১ম হিজরি ও ১০ম হিজরির মধ্যে আন্তঃকালীয় মাসের সংখ্যা এবং অবস্থান অনিশ্চিত; হিজরত, বদর উহুদ এবং খন্দকের যুদ্ধের মতো ইসলামের প্রাথমিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর জন্য সাধারণত উদ্ধৃত করা পশ্চিমা বর্ষপঞ্জিত তারিখগুলো সতর্কতার সাথে দেখা উচিত কারণ সেগুলো এক, দুই বা এমনকি তিনটি চন্দ্র মাস পর্যন্ত ভুল হতে পারে।

এই নিষেধাজ্ঞাটি মুহাম্মাদ বিদায়ী খুতবার সময় উল্লেখ করেছিলেন যা মক্কায় বিদায়ী হজ্জের সময় আরাফাত পর্বতে ১০ হিজরির ৯ জ্বিলহজ্জ তারিখের বিদায় হজ্জের ভাষণ (জুলীয় তারিখ শুক্রবার ৬ মার্চ, ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ) দেওয়া হয়েছিল।

অবশ্যই নাসি' একটি জঘন্য সংযোজন, যা কাফিরদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে। এক বছর তারা নাসিকে অনুমোদন করে, আরেক বছর তারা নিষেধ করে। তারা পবিত্র মাসের সংখ্যার ক্ষেত্রে ঐশ্বরিক নির্দেশ পালন করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা যা আল্লাহ অলঙ্ঘনীয় বলে ঘোষণা করেছেন তা অপবিত্র করে এবং যা অপবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন তা পবিত্র করে। নিঃসন্দেহে সময়, সৃষ্টি থেকে, আসমান ও জমিনের সৃষ্টির সময় যেমনটি হয়ে এসেছে। আল্লাহর দৃষ্টিতে মাসের সংখ্যা বারো। এই বারো মাসের মধ্যে চারটি পবিত্র, যথাক্রমে, রজব, যা একা এবং তিনটি পরপর।[২০]

মুহাম্মাদ উল্লিখিত তিনটি পরপর নিষিদ্ধ মাস (যে মাসগুলিতে যুদ্ধ নিষিদ্ধ) হল জ্বিলকদ, জ্বিলহজ্জ এবং মুহররম। একক নিষিদ্ধ মাস হল রজব। এই মাসগুলোকে নতুন ইসলামি বর্ষপঞ্জি ও প্রাক-ইসলামি মক্কীয় বর্ষপঞ্জি উভয় ক্ষেত্রেই নিষিদ্ধ বলে মনে করা হতো।[][২১][২২][২৩][২৪]

সপ্তাহের দিনসমূহ

[সম্পাদনা]

ইসলামি দিন শুরু হয় সূর্যাস্তের সময়। মুসলিমরা "সমাবেশের দিন"-এর (ইয়োম আল-জুমাহ) দুপুরে একটি মসজিদে প্রার্থনার জন্য জড়ো হয় যা দিনের চন্দ্র শুরুর সাথে মিলে যায় যা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, সূর্য সম্পূর্ণরূপে অস্ত যাওয়ার মুহুর্তে ঘটে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এ দিন শুরু হয় মাগরিবের মাধ্যমে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

এইভাবে "সমাবেশের দিন" প্রায়ই সাপ্তাহিক ছুটি হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি প্রায়শই সরকারি ছুটির দিন করা হয়েছে, অনেক মুসলিম দেশ শুক্রবার ও শনিবার (যেমন, মিশর, সৌদি আরব) বা বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারকে সরকারি সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসাবে গ্রহণ করে এবং সেই সময়ে অফিস বন্ধ থাকে; অন্যান্য দেশ (যেমন ইরান) শুধুমাত্র শুক্রবারকে বিশ্রামের দিন হিসেবে বেছে নেয়। আরও কিছু দেশ (যেমন, তুরস্ক, পাকিস্তান, মরক্কো, নাইজেরিয়া, মালয়েশিয়া) শনিবার-রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং শুক্রবারকে একটি দীর্ঘ মধ্যাহ্ন বিরতির সাথে উপাসনার জন্য ছুটি দেওয়ার জন্য একটি কার্যদিবস বানিয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ক্রম নাম আরবি অর্থ গ্রেগরীয় সমতুল্য
আল-আহাদ ٱلْأَحَد প্রথম রবিবার
আল-ইসনাইন الاِثْنَيْن দ্বিতীয় সোমবার
আস-সুলাসা ٱلثُّلَاثَاء তৃতীয় মঙ্গলবার
আল-আরবিয়া ٱلْأَرْبِعَاء চতুর্থ বুধবার
আল-খামিস ٱلْخَمِيس পঞ্চম বৃহস্পতিবার
আল-জুমাহ ٱلْجُمْعَة সমাবেশ শুক্রবার
আশ-সাবত ٱلسَّبْت বিশ্রাম শনিবার

মাসসমূহ

[সম্পাদনা]

বারোটি হিজরি মাসের চারটিকে পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়: রজব (৭ম), এবং তিন ক্রম মাস জিলক্বদ (১১তম), জিলহজ্জ (১২তম) ও মুহররম (১ম)।[২৫] যেহেতু একটি ক্রান্তীয় বছরের গড় সময়কাল হল ৩৬৫.২৪২১৯ দিন, আবার অন্যদিকে একটি সিনোডিক মাসের দীর্ঘমেয়াদী গড় সময়কাল ২৯.৫৩০৫৮৭৯৮১ দিন তাই একটি গড় চন্দ্র বছর গড় সৌর বছর থেকে ১০.৮৭৫১৩ দিন (৩৬৫.২৪২১৯ - ১২ × ২৯.৫৩০৫৮৭৯৮১ ≈) ছোট হয়ে থাকে, যার ফলে প্রতি পঞ্জিকা বছরে হিজরি বর্ষপঞ্জির মাসগুলো গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির চেয়ে প্রায় এগারো দিন করে এগিয়ে যেতে থাকে।[] "ফলস্বরূপ, বারো চান্দ্র মাসের চক্রটি একই ঋতুতে ৩৩ (সৌর) বছরে প্রত্যাবর্তন করে।[২৬]

নং মাসের নাম আরবি নাম অর্থ টীকা
মুহররম محرّم নিষিদ্ধ এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ (হারাম) বিধায় এটি পবিত্র মাস বলে বিবেচিত। এ মাসের ১০ম দিনে আশুরা পালিত হয়।
সফর صفر রিক্ত, শূন্য, ভ্রমণ এ মাসের এরূপ নামকরণের কারণ সম্ভবত এটি যে, প্রাক-ইসলামি যুগে আরবীয় ঘর-বাড়ি এই সময়ে শূন্য থাকতো যখন গৃহস্থরা খাবার সংগ্রহ করতো। অন্যমতে, তারা তাদের শত্রুদের যুদ্ধে পরাজিত করে সবকিছু লুট করে নিয়ে যেত বলে এ মাসের নাম সফর।

সফর শব্দের আরেকটি অর্থ হল ভ্রমণ। এ মর্মে সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত হলো,তৎকালীন আরবরা এ মাসে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বেশি ভ্রমণ করত বলে এ মাসের নাম রাখা হয়েছে সফর।

রবিউল আউয়াল ربيع الأولي প্রথম বসন্ত অন্য অর্থ চারণ, কেননা এই সময়ে গবাদি পশু চারণ করা হতো। মাসটি মুসলিমদের জন্য পবিত্র একটি মাস বলে বিবেচিত কারণ মুহাম্মাদ এই মাসে জন্মগ্রহণ করেন।
রবিউস সানি ربيع الاخري দ্বিতীয় বসন্ত
জমাদিউল আউয়াল جمادى الأولی প্রথম শুকনো ভূমিখণ্ড প্রাক-ইসলামি গ্রীষ্মকাল হিসেবে বিবেচিত।
জমাদিউস সানি جمادي الآخر ي দ্বিতীয় শুকনো ভূমিখণ্ড
রজব رجب শ্রদ্ধা, সম্মান এটি আরবি বছরের দ্বিতীয় মাস যখন যুদ্ধ নিষিদ্ধ। 'রজব' শব্দের অন্য অর্থ 'সরিয়ে নেওয়া'। কেননা প্রাক-ইসলামি যুগে আরবরা এ মাসে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার জন্য বর্শার মাথা সরিয়ে রাখতো।
শা'বান شعبان বিক্ষিপ্ত এর নামকরণের সম্ভাব্য কারণ এ মাসের পানির অভাব। তৎকালীন আরবেরা এ মাসে পানির সন্ধানে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তো। তাই এর নাম 'শাবান'। এর অন্য অর্থ দুইয়ের মাঝামাঝি, কেননা এটি রজব এবং রমজান মাসের মাঝখানে।
রমজান رمضان দহন দহন বলতে উপবাস বা রোজাকে বোঝানো হয়েছে, কেননা উপবাস বা রোজার মাধ্যমে ব্যক্তির পার্থিব লালসা দগ্ধ হয়। রমজান মুসলিমদের অন্যতম পবিত্র মাস। মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী এ মাসে পবিত্র কুরআন নাজিলের সূচনা হয়। এ মাসে মুসলিমদেরকে সুবহে সাদিক(শেষরাত) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বাধ্যতামূলক রোজা রাখতে হয়।
১০ শাওয়াল شوّال উত্থিত এ নামের কারণ এই সময়ে স্ত্রী-উট বাচ্চা প্রসব করে এবং লেজ উত্থিত করে।
১১ জ্বিলকদ ذو القعدة সাময়িক যুদ্ধবিরতির মাস এ মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ, তবে আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষা বৈধ।
১২ জ্বিলহজ্জ ذو الحجة হজ্জের মাস এই মাসে মুসলিমরা মক্কায় কাবার উদ্দেশ্যে হজ্জ করতে যায়। এ মাসের ৮, ৯ ও ১০ তারিখে হজ্জ হয়। ঈদুল আযহা এই মাসের ১০ তারিখে শুরু হয় এবং ১২ তারিখ সূর্যাস্তের সাথে সাথে শেষ হয়। এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ।

মাসের দৈর্ঘ্য

[সম্পাদনা]

ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রতিটি মাস নতুন চন্দ্র চক্রের আগমনের সাথে সাথে শুরু হয়। ঐতিহ্যগতভাবে, এটি চাঁদের অর্ধচন্দ্রের (হেলাল) প্রকৃত পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে পূর্ববর্তী চন্দ্রচক্রের তথা পূর্ববর্তী মাসের সমাপ্তি চিহ্নিত করে এর ফলে নতুন মাস শুরু হয়। ফলস্বরূপ চাঁদের দৃশ্যমানতা, পৃথিবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় অবস্থান ও আবহাওয়ার অবস্থার উপর নির্ভর করে প্রতি মাসে ২৯ বা ৩০ দিন থাকতে পারে। যদিও কিছু গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়, বিশেষত আলাভি, দায়ূদী এবং সুলেইমানিশিয়া ইসমাইলি মুসলিমরা এক ধরনের সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি (নিচের অনুচ্ছেদ দেখুন) ব্যবহার করে যেখানে বিজোড়-সংখ্যার মাসে ত্রিশ দিন থাকে (ও একটি অধিবর্ষে দ্বাদশ মাসও) এবং জোড় মাসে ২৯টি দিন থাকে।

বর্ষ সংখ্যায়ন

[সম্পাদনা]

প্রাক-ইসলামি আরবে একটি বড় ঘটনা ঘটার বছরটি তার নামে চিহ্নিত করার প্রথা ছিল। সুতরাং ইসলামি ঐতিহ্য অনুযায়ী খ্রিস্টীয় আকসুম রাজ্যের (ইথিওপিয়া) প্রদেশ ইয়েমেনের প্রদেশপতি আবরাহা হাতি বিশিষ্ট বাহিনী দিয়ে কাবা ধ্বংসের চেষ্টা করেছিলেন যা ব্যর্থ হয়েছিল, কিন্তু সেই বছরটি হস্তিবর্ষ নামে পরিচিত হয় যে বছরে মুহাম্মাদ জন্মেছিলেন (সূরা ফীল)। বেশিরভাগই এই বছরটিকে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের সমতুল্য মনে করে, কিন্তু কিছু ব্যক্তি ৫৭১ খ্রিস্টাব্দ ব্যবহার করে।

হিজরতের প্রথম দশটি বছরের জন্য প্রথমে সংখ্যা বরাদ্দ ছিল না, কিন্তু আল-বিরুনির মতে সেগুলোর নাম মুহাম্মাদের জীবনের ঘটনাবলী থেকে দেওয়া হয়েছিল:[২৭]

  1. অনুমতির বর্ষ
  2. যুদ্ধের আদেশের বর্ষ
  3. বিচারের বর্ষ
  4. বিয়ের অভিনন্দনের বর্ষ
  5. ভূমিকম্পের বর্ষ
  6. অনুসন্ধানের বর্ষ
  7. বিজয় অর্জনের বর্ষ
  8. সাম্যের বর্ষ
  9. অব্যাহতির বর্ষ
  10. বিদায়ের বর্ষ

১৭ হিজরি সনে (৬৩৮ খ্রিস্টাব্দ), বসরায় নিযুক্ত খলিফা উমরের একজন কর্মকতা আবু মুসা আশয়ারী উমরের কাছ থেকে প্রাপ্ত চিঠিপত্রে বছরের অনুপস্থিতির অভিযোগ করেছিলেন ও কোন নির্দেশাবলী বর্তমান বছরের তা নির্ধারণ করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। এই প্রতিবেদনটি উমরকে মুসলিমদের জন্য একটি পঞ্জিকা সাল প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছিল। পরামর্শদাতাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে প্রথম বছরটি হতে হবে মুহাম্মদের মদিনায় আগমনের বছর (যা মুহাম্মদের আগমনের আগে ইয়াসরিব নামে পরিচিত ছিল)।[২৮] এরপর উসমান ইবন আফফান প্রাক-ইসলামি যুগের আরব্য রীতি মেনে বছরের প্রথম মাস মুহররমে শুরু করার পরামর্শ দেন। ইসলামি বর্ষপঞ্জির বছরগুলি এভাবে মুহররম মাস থেক্র মুহাম্মাদের মদিনা শহরে আগমনের বছর থেকে শুরু হয়, যদিও প্রকৃত হিজরত হয়েছিল আন্তঃকালিত বর্ষপঞ্জির সফর ও রবিউল আউয়াল মাসে তথা নতুন স্থির বর্ষপঞ্জির মুহররম শুরু হওয়ার দুই মাস আগে।[] হিজরতের কারণে এই বর্ষপঞ্জির নামকরণ করা হয় হিজরি বর্ষপঞ্জি।

এফ.এ. শামসি (১৯৮৪) দাবি করেছেন যে আরবি বর্ষপঞ্জি কখনো আন্তঃকালিত ছিল না। তার মতে নতুন স্থির ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাসের প্রথম দিন (১ মুহররম ১ হিজরি সন) আগের বর্ষপঞ্জি থেকে ভিন্ন ছিলো না। প্রকৃত প্রাক-ইসলামি আরবীয় বর্ষপঞ্জিতে যে তারিখে নবি কুবা থেকে মদিনায় গমন করেছিলেন তা ছিল ২৬ রবিউল আউয়াল।[২৯] নতুন স্থির বর্ষপঞ্জির ১ মুহাররম শুক্রবার, জুলীয় বর্ষপঞ্জির ১৬ জুলাই ৬২২ খ্রিস্টাব্দ তারিখের সমতুল্য দেওয়ানী সারণী তারিখ (একই দিবালোক সময়কাল) এর সাথে মিলে যায়।[৩০][৩১] ইসলামি দিনটি ১৫ জুলাই সূর্যাস্তের পূর্বে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়। জুলীয় তারিখটি (১৬ জুলাই) মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তাদের নিজস্ব সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জির ছাঁচে ফেলে নির্ধারণ করেন যাতে প্রতি চন্দ্র বছরে ৩০ ও ২৯-দিনের মাস এবং প্রতি ৩০ বছরে এগারোটি অধিক দিবস ছিল। উদাহরণস্বরূপ, আল-বিরুনি এই জুলীয় তারিখটি ১০০০ খ্রিস্টাব্দে উল্লেখ করেছেন।[৩২] যদিও মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী বা আধুনিক পণ্ডিতরা ইসলামি সাল নির্ধারণের জন্য এটি ব্যবহার না করলেও চিকন অর্ধচন্দ্র ১৫ জুলাইতে সন্ধ্যার পূর্ববর্তী সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরেই প্রথম দৃশ্যমান হবে (ধরে নিচ্ছি মেঘ চাঁদকে অস্পষ্ট করেনি) যা ১.৫ দিন পরে ১৪ জুলাই সকালে সম্পর্কিত কালো চাঁদ (জ্যোতির্বিদ্যা নতুন চাঁদ) এর পরে।[৩৩]

যদিও হাগারিজম: দ্য মেকিং অব দ্য ইসলামিক ওয়ার্ল্ড-এ কুকক্রোন হিজরি বর্ষপঞ্জি তারিখের সত্যায়িত ব্যবহারযুক্ত প্রথম টিকে থাকা ১৭ হিজরির ও অন্য একটি বর্ষপঞ্জির (কিবতীয়) তারিখ সমেত একটি মুদ্রার উদ্ধৃতি ২২ হিজরির মিশরের প্যাপিরাসের পিইআরএফ ৫৫৮ থেকে প্রদান করেন।

জ্যোতির্বিদ্যাগত বিবেচনা

[সম্পাদনা]

ইসলামি বর্ষপঞ্জির মাস শুরুর তারিখগুলো নির্ধারণের জন্য পর্যবেক্ষণের সুনির্দিষ্ট পরিবর্তনশীল পদ্ধতির উপর নির্ভর করার কারণে এই তারিখগুলো কখনও কখনও জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্যোতির্বিজ্ঞানের চন্দ্র বর্ষপঞ্জির মাস শুরুর তারিখ থেকে সামান্য পরিবর্তিত হয়, যা সরাসরি জ্যোতির্বিদ্যাগত গণনা ভিত্তিক। তবুও ইসলামি বর্ষপঞ্জির কদাচিৎ জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় চান্দ্র পঞ্জিকা পদ্ধতি থেকে প্রায় আনুমানিক তিন দিনের বেশি পরিবর্তিত হয়। ইসলামি বর্ষপঞ্জি ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় চান্দ্র পঞ্জিকা উভয়ই তাদের গণনায় সৌরবর্ষের কোনো হিসাব নেয় না এবং একইভাবে এই দুটি কঠোর চন্দ্র ভিত্তিক বর্ষপঞ্জির পদ্ধতির বছরের চারটি ঋতুর সময় গণনা করার ক্ষমতা নেই।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় চান্দ্র পঞ্জিকা পদ্ধতিতে ১২টি চান্দ্র মাসের একটি বছর ৩৫৪.৩৭ দিন দীর্ঘ। এই বর্ষপঞ্জি পদ্ধতিতে চন্দ্র মাসগুলি মাসিক "সংযোগ" এর সময় সুনির্দিষ্টভাবে শুরু হয় যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে সবচেয়ে সরাসরি অবস্থানে থাকে। এর মাসকে পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের প্রদক্ষিণ করার গড় সময়কাল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় (২৯.৫৩ দিন)। নিয়মানুযায়ী ৩০ দিন এবং ২৯ দিনের মাস একে অপরের সাথে পরপর দুই মাস যোগ হয়ে ৫৯ পূর্ণ দিনে পরিণত হয়। এটি শুধুমাত্র ৪৪ মিনিটের একটি ছোট মাসিক উদ্ধৃত রেখে দেয় যা ২.৭৩ বছরে জমতে জমতে মোট ২৪ ঘন্টা হয়ে (অর্থাৎ, একটি পূর্ণ দিনের সমতুল্য) যোগ হয়। হিসাব নিষ্পত্তি করার জন্য চন্দ্র বর্ষপঞ্জিতে প্রতি তিন বছরে একটি দিন যোগ করা যথেষ্ট, একইভাবে প্রতি চার বছরে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিতে একটি দিন যোগ করা হয়।[৩৪] এই সামঞ্জস্যের প্রযুক্তিগত বিশদ বিবরণ সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জিতে বর্ণনা করা হয়েছে।

তবে ইসলামি বর্ষপঞ্জি মাস শুরুর তারিখ নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন নিয়মের উপর ভিত্তি করে তৈরি।[৩৫] প্রতি মাসে তবুও ২৯ বা ৩০ দিন থাকে, কিন্তু নিযুক্ত পর্যবেক্ষণের পরিবর্তনশীল পদ্ধতির কারণে সাধারণত ২৯ বা ৩০-দিনের মাসের দৈর্ঘ্যের ক্রমানুসারে কোনও স্পষ্ট ক্রম থাকে না। ঐতিহ্যগতভাবে প্রতি মাসের প্রথম দিনটি (সূর্যাস্তের সময় শুরু হয়) হেলাল (অর্ধচন্দ্র) প্রথম দেখার দিন থেকে শুরু হয়। যদি মাসের ২৯ তম দিনের পরপরই হেলাল পালন না করা যায় (হয় কারণ মেঘ হেলাল দেখা বাধা দেয় বা চাঁদ অস্ত যাওয়ার সময় পশ্চিম আকাশ তখনও খুব উজ্জ্বল থাকে), তাহলে সেই সূর্যাস্তের সময় শুরু হওয়ার দিনটি হবে ৩০ তারিখ। মুসলিম নেতাদের একটি কমিটির সামনে এক বা একাধিক বিশ্বস্ত লোককে সাক্ষ্য দিয়ে হেলালের দৃশ্য দেখাতে হবে। হিলাল যে দিনটি পালন করার দিনটি নির্ধারণ করা ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানে মুসলিমদের আগ্রহের প্রেরণা, যা বহু শতাব্দী ধরে ইসলামকে সেই বিজ্ঞানের অগ্রভাগে রেখেছিল। তারপরও উভয় চন্দ্র গণনা পদ্ধতিই চূড়ান্তভাবে চন্দ্রচক্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়ার কারণে উভয় ব্যবস্থাই একে অপরের সাথে মোটামুটিভাবে মিলে যায়, ফলে একে অপরের অবস্থানের সাথে মিলে যাওয়ার বাইরে কখনোই তিন দিনের বেশি হয় না।

একজন মানুষ আরেকজন দেখছেন, যিনি আধুনিক টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখছেন
ধর্মগুরুরা চাঁদ দেখছেন।

মাস শুরুর তারিখ নির্ধারণের এই ঐতিহ্যবাহী প্রথা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে অনুসরণ করা হয়। প্রতিটি ইসলামি রাষ্ট্র তার ভূখণ্ডে একটি নতুন মাসের শুরু ঘোষণা করার আগে নতুন চাঁদের নিজস্ব মাসিক পর্যবেক্ষণের জন্য প্রচেষ্টা চালায় (বা এটি ব্যর্থ হলে ৩০ দিন পূর্ণ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে)। কিন্তু অর্ধচন্দ্র সংযোজনের মাত্র ১৭ ঘন্টা পরে এবং শুধুমাত্র আবহাওয়া, সময়, ভৌগোলিক অবস্থান, সেইসাথে বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরামিতিগুলোর সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি অনুকূল অবস্থার অস্তিত্বের সাপেক্ষে দৃশ্যমান হয়।[৩৬] পশ্চিমা মুসলিম দেশগুলি চাঁদ পশ্চিমে যাওয়ার সাথে সাথে সূর্যের চেয়ে ক্রমশ দেরিতে অস্ত যায় এই সত্যের প্রেক্ষিতে অনুকূল পরিস্থিতিতে সংযোগের পর থেকে তার "বয়স"-এর অনুরূপ বৃদ্ধির সাথে পূর্ব মুসলিম দেশগুলির তুলনায় একদিন আগে নতুন চাঁদ দেখতে পারে। এই সমস্ত কারণের পারস্পরিক ক্রিয়াকলাপের ফলে প্রতিটি মাসের শুরু এক মুসলিম দেশ থেকে অন্য মুসলিম দেশভেদে সংযোজন পরবর্তী ৪৮-ঘণ্টার সময়কালে আলাদা হয়। কোনো দেশে বর্ষপঞ্জি দ্বারা প্রদত্ত তথ্য বর্তমান মাসের বাইরে প্রসারিত হয় না।

বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ মাসের শুরু নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন জ্যোতির্বিদ্যা-সম্পর্কিত নিয়ম প্রয়োগ করে এই অসুবিধাগুলির কিছু কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। এইভাবে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ও আরও কয়েকটি প্রতি মাসে সূর্যাস্তের প্রথম দিনে শুরু হয় যেদিন চাঁদ সূর্যের পরে অস্ত যায় (সূর্যাস্তের পরে চন্দ্রাস্ত)। মিশরে মাস শুরু হয় সূর্যাস্তের প্রথম দিনে যেদিন চাঁদ সূর্যের অন্তত পাঁচ মিনিট পরে অস্ত যায়। উপলব্ধ তথ্যগুলির একটি বিশদ বিশ্লেষণ দেখায় যে এই বিষয়ে দেশগুলি কি বলছে ও আসলে তারা কি করছে তার মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে৷ In কিছু দৃষ্টান্ত অনুযায়ী, একটি দেশ যা বলছে তা অসম্ভব।[৩৭][৩৮]

ইসলামি বর্ষপঞ্জির কিছুটা পরিবর্তনশীল প্রকৃতির কারণে বেশিরভাগ মুসলিম দেশে ইসলামি বর্ষপঞ্জি প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, অন্যদিকে সৌর-ভিত্তিক গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি এখনও প্রাথমিকভাবে বাণিজ্যকৃষি বিষয়ে ব্যবহৃত হয়।

ধর্মতাত্ত্বিক বিবেচনা

[সম্পাদনা]

যদি জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনা ব্যবহার করে ইসলামি বর্ষপঞ্জি তৈরি করা হতো তাহলে সমগ্র মুসলিম বিশ্বের মুসলিমরা তাদের সমস্ত প্রয়োজন মেটাতে এটি ব্যবহার করতে পারতো, যেভাবে আজ তারা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে। তবে এটি করা বৈধ কিনা তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রয়েছে।[৩৯]

সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মতাত্ত্বিকগণ ইসলামি বর্ষপঞ্জিতে গণনার ব্যবহারের বিরোধিতা করেন (প্রতিটি মাস ২৯-এর কম বা ৩০ দিনের বেশি হওয়া উচিত নয়) এই কারণে যে মাসের শুরু নির্ধারণ করার জন্য রমজান ও শাওয়ালের নতুন চাঁদ দেখার জন্য মুহাম্মদের সুপারিশের সাথে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।[৪০][৪১][]

যদিও কিছু ইসলামি আইনবিদ মুহাম্মাদের শিক্ষা এবং চন্দ্র মাসের সূচনা নির্ধারণের জন্য গণনার ব্যবহারের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব দেখতে পান না।[৪২] তারা মনে করে যে মুহাম্মদের সুপারিশটি সময়ের সাথে সাথে সংস্কৃতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং এর সাথে উপাসনামূলক কাজের সাথে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়।[৪৩][৪৪][৪৫]

এইভাবে আইনবিদ আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির এবং ইউসূফ আল-কারযাভী উভয়েই যথাক্রমে ১৯৩৯ ও ২০০৪ সালে ইসলামি বর্ষপঞ্জির সমস্ত মাসের শুরু নির্ধারণের জন্য গণনার ব্যবহারকে সমর্থন করেছেন।[৪৬][৪৭] ২০০৬ সালে উত্তর আমেরিকার ফিকহ পরিষদ[৪৮][৪৯] এবং ইউরোপীয় ফতোয়া ও গবেষণা পরিষদ ২০০৭ সালে তাই করেছিল।[৫০][৫১]

ফ্রান্সের প্রধান মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনগুলিও ২০১২ সালে ঘোষণা করে যে পৃথিবীর যে কোনও স্থানে অর্ধচন্দ্র দেখার সম্ভাবনার মানদণ্ড বিবেচনা করে তারা এখন থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনার উপর ভিত্তি করে একটি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করবে।[৫২][৫৩] কিন্তু, ২০১৩ সালে মুসলিম ইমানের ফরাসি পরিষদ কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিয়ম গৃহীত হওয়ার পরপরই সমিতির নতুন নেতৃত্ব ২০১৩ সালের রমজানের প্রাক্কালে গৃহীত নিয়ম প্রয়োগ করার পরিবর্তে সৌদি আরবের ঘোষণা অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ফ্রান্সের মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভাজন ঘটে, যাদের কিছু সদস্য নতুন নিয়ম অনুসরণ করে এবং অন্যরা সৌদি ঘোষণা অনুসরণ করে।

ইসমাইলি-তাইয়েবি বোহরাদের দাই আল-মুতলাক নামক প্রতিষ্ঠান ফাতিমীয় ইমামদের সময়কাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসা জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনার ভিত্তিতে তৈরি সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে (নিচের অনুচ্ছেদটি দেখুন)।

১২-চন্দ্রের জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় বর্ষপঞ্জি

[সম্পাদনা]

তুরস্কের ইসলামি বর্ষপঞ্জি

[সম্পাদনা]

তুর্কি মুসলিমরা একটি ইসলামি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে যেখানে ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর (তুর্কি: Diyanet İşleri Başkanlığı) ভবিষ্যত কিছু মাসের হিসাব অগ্রীম করে রাখে। ১ মুহররম ১৪০০ হিজরি (২১ নভেম্বর ১৯৭৯) থেকে ২৯ জিলহজ্জ ১৪৩৫ (২৪ অক্টোবর ২০১৪) পর্যন্ত গণনাকৃত তুর্কি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি এই নিয়মে চলতো: "চন্দ্র মাস সন্ধ্যায় শুরু হবে বলে ধরে নেওয়া হয়, যখন, স্থলজগতের কিছু অঞ্চলের মধ্যে, স্থানীয় সূর্যাস্তের সময় অর্ধচন্দ্রের গণনা করা কেন্দ্র স্থানীয় দিগন্ত থেকে ৫° এর বেশি এবং (ভূকেন্দ্রিকভাবে) সূর্য থেকে ৮° এর বেশি হবে।" বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী (হিসাবকৃত) সূর্যাস্তের সময় অর্ধচন্দ্রকে আঙ্কারার স্থানীয় দিগন্তের উপরে থাকতে হবে।[৫৪]

সৌদি আরবের উম্ম আল-কুরা বর্ষপঞ্জি

[সম্পাদনা]

সৌদি আরব হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রতিটি মাসের সূচনা নির্ধারণ করতে দর্শন পদ্ধতি ব্যবহার করে। ১৪১৯ হিজরি (১৯৯৮/৯৯) থেকে, প্রতিটি চান্দ্র মাসের শুরুতে অর্ধচন্দ্রের প্রথম দর্শন নির্ধারণের জন্য সরকার কর্তৃক একাধিক সরকারি হেলাল দর্শন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবুও ধর্মীয় কর্তৃপক্ষও কম অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষকদের সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেয় এবং এইভাবে প্রায়শই এমন একটি তারিখে অর্ধচন্দ্র দেখার ঘোষণা দেয়া হয় যখন সফকারি কমিটির কেউই অর্ধচন্দ্র দেখতে পায়নি।

দেশটি জ্যোতির্বিদ্যাগত গণনার উপর ভিত্তি করে উম্ম আল-কুরা বর্ষপঞ্জিও ব্যবহার করে, তবে এটি প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে সীমাবদ্ধ। এই বর্ষপঞ্জি প্রতিষ্ঠায় ব্যবহৃত পরামিতিগুলো হিজরি ১৪২৩-এর দশকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করা হয়েছে।[৫৫][৫৬]

হিজরি ১৪২০-এর পূর্বে (১৮ এপ্রিল ১৯৯৯ এর আগে) যদি রিয়াদে সূর্যাস্তের সময় চাঁদের বয়স কমপক্ষে ১২ ঘন্টা হয়, তবে সেই সূর্যাস্তের সময় "শেষ" দিনটি হতো মাসের প্রথম দিন। এর ফলে প্রায়শই সৌদিরা হজের তারিখগুলি সহ অন্যান্য পবিত্র দিন প্রধানত মুসলিম দেশগুলির এক বা এমনকি দু'দিন আগে উদযাপন করে, যেটি শুধুমাত্র সৌদি তারিখগুলি ব্যবহার করে তারিখ করা যেতে পারে কারণ এটি মক্কায় সম্পাদিত হয়।

১৪২০-২২ হিজরিতে যদি মক্কায় সূর্যাস্তের পরে চন্দ্রাস্ত হয়, তবে সেই সূর্যাস্তের দিনটি হত সৌদি মাসের প্রথম দিন, মূলত মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং অন্যান্যরা একই নিয়ম ব্যবহার করে (যে স্থান থেকে বাদ দিয়ে হেলাল পালন করা হয়ে থাকে)।

১৪২৩ হিজরির (১৬ মার্চ ২০০২) শুরু থেকে মক্কায় সূর্যাস্তের পরে চন্দ্রাস্তের প্রয়োজন ছাড়াও সূর্যাস্তের আগে সূর্য ও চাঁদের ভূকেন্দ্রিক সংযোগের প্রয়োজন করে নিয়মটি কিছুটা স্পষ্ট করা হয়েছে। এটি নিশ্চিত করে যে চাঁদ সূর্যাস্তের মাধ্যমে সূর্যের পেছনে চলে গেছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে অর্ধচন্দ্র দেখার জন্য চন্দ্রাস্তের আগে আকাশ তবুও খুব উজ্জ্বল হতে পারে।

২০০৭ সালে উত্তর আমেরিকার ইসলামি সমাজ, উত্তর আমেরিকার ফিকহ পরিষদ এবং ইউরোপীয় ফতওয়া ও গবেষণা পরিষদ ঘোষণা করে যে তারা এখন থেকে এর উপর ভিত্তি করে একটি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করবে। সমস্ত চান্দ্র মাসের সূচনা (এবং সেইজন্য সমস্ত ধর্মীয় দিবসের সাথে যুক্ত দিনগুলি) নির্ধারণ করতে (আগে থেকেই) উম্ম আল-কুরা বর্ষপঞ্জির মতো একই প্যারামিটার ব্যবহার করে গণনা করা হবে। এটি ভবিষ্যতের কোনো সময়ে সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের বর্ষপঞ্জিকে একত্রিত করার পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অভিপ্রেত ছিল।[৫৭]

১৪৩৮ হিজরি সন (১ অক্টোবর ২০১৬) থেকে সৌদি আরব ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ইসলামি বর্ষপঞ্জির ব্যবহার বজায় রেখে[৫৮] সরকারি কর্মচারীদের মাসিক বেতন প্রদানের জন্য (খরচ কমানোর পরিমাপ হিসাবে) গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি গ্রহণ করেছে[৫৯]

ইসলামি সাল ব্যবহারকারী অন্যান্য বর্ষপঞ্জি

[সম্পাদনা]

সৌর হিজরি বর্ষপঞ্জি ইরান ও আফগানিস্তানে ব্যবহৃত একটি সৌর বর্ষপঞ্জি যার তারিখ হিজরত তথা ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদের মক্কা থেকে মদিনায় স্থানান্তরের দিন থেকে গণনা করা হয়।[৬০]

সারণিকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি

[সম্পাদনা]

সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জি হল একটি নিয়ম ভিত্তিক ইসলামি বর্ষপঞ্জি যেখানে প্রতিটি মাস নির্ধারণে পর্যবেক্ষণ বা জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় হিসাবের পরিবর্তে গাণিতিক নিয়ম ব্যবহার করা হয়। এটাতে ৩৫৫ দিন বিশিষ্ট ১১টি অধিবর্ষ সহ ৩০ দিনের চক্র সমেত ৩৫৪ দিনের ১৯ বছর বিশিষ্ট চক্র ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি প্রায় ২,৫০০ সৌর বছর বা ২,৫৭০ চান্দ্র বছরে একদিনের জন্য নির্ভুল। এটি স্বল্প মেয়াদে প্রায় এক বা দুই দিন পর্যন্ত বিচ্যুত হয়।

কুয়েতি অ্যালগরিদম

[সম্পাদনা]

মাইক্রোসফট সারণীকৃত ইসলামি বর্ষপঞ্জির একটি সংস্করণ "কুয়েতি অ্যালগরিদম" ব্যবহার করে,[৬১] যা গ্রেগরীয় তারিখকে ইসলামি তারিখে রূপান্তর করতে সক্ষম। মাইক্রোসফট দাবি করে যে তাদের সংস্করণটি কুয়েতের ঐতিহাসিক তথ্যের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যদিও এর সাথে একটি পরিচিত সারণীকৃত বর্ষপঞ্জির মিল রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য তারিখ

[সম্পাদনা]

ইসলামি (হিজরি) বছরে গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো হলো:

প্রধানত শিয়া মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা দিবস:

ব্যবহার

[সম্পাদনা]
জেরুসালেমের পুরনো একটি লাইব্রেরির বেসরকারি ও হিজরি প্রতিষ্ঠার তারিখ

বর্তমানে ইসলামি বর্ষপঞ্জি প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় এবং মুসলিম দেশগুলোতে ঘটনা ও নথিপত্রের তারিখ লিপিবদ্ধকরণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। খাঁটি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি হিসেবে এর বৈশিষ্ট্যের ফলে এটি কৃষিজ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়না এবং ঐতিহাসিকভাবে ইসলামি সম্প্রদায়গুলো এই উদ্দেশ্যে অন্য বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে এসেছে: মিশরীয় বর্ষপঞ্জি অতীতে ইসলামি দেশগুলোতে বহুলভাবে ব্যবহৃত হত, এবং ইরানি বর্ষপঞ্জিগুলো ও ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের উসমানীয় বর্ষপঞ্জি (একটি পরিবর্তিত জুলীয় বর্ষপঞ্জি) এসব দেশগুলোতে কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হতো।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলইরাকে ব্যাবিলনীয় বর্ষপঞ্জির আরামীয় নামগুলো এখনো ধর্মনিরপেক্ষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মাগরেব অঞ্চলে গ্রামীণ বর্বর কৃষকেরা কৃষিজ উদ্দেশ্যে এখনো জুলীয় বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে।[৬২] এসব স্থানীয় সৌর বর্ষপঞ্জির নাগরিক উদ্দেশ্যে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির নিকট-সর্বজনীন গ্রহণের ফলে গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সৌদি আরব চন্দ্র ইসলামি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে।[৬৩] ইন্দোনেশিয়ায় জাভানীয় বর্ষপঞ্জি ইসলামি ও প্রাক ইসলামি শক বর্ষপঞ্জির উপাদান সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে।

ব্রিটিশ লেখক নিকোলাস হ্যাগার লিখেছেন যে লিবিয়ার নিয়ন্ত্রণ দখল করার পর মুয়াম্মর গাদ্দাফি ১ ডিসেম্বর ১৯৭৮ তারিখে "ঘোষণা করেন" যে "মুসলিম বর্ষপঞ্জি ৬২২ খ্রিস্টাব্দের হিজরতের বিপরীতে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নবি মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর থেকে শুরু হওয়া উচিত"। এই সিদ্ধান্ত দেশকে আদর্শ মুসলিম বর্ষপঞ্জি থেকে দশ সৌর বছর পিছিয়ে দেয়।[৬৪] যদিও ২০০৬ সালের এনসাইক্লোপিডিয়া অফ দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড অনুযায়ী "গাদ্দাফির অনন্য লিবীয় বর্ষপঞ্জি তবু আরও বিভ্রান্তিকর যা নবির জন্ম থেকে, বা কখনো কখনো বছর গণনা করে। জুলাই ও আগস্ট মাস, যেগুলো জুলিয়াসঅগাস্টাস সিজারের নামে হয়েছে, সেগুলো এখন যথাক্রমে নাসেরহানিবল।"[৬৫] দেশে ২০০১-এর সফরে, মার্কিন রিপোর্টার নিল ম্যাকফারকুহার পর্যবেক্ষণ করেছেন, "লিবিয়ায় জীবন এতটাই অনুমান অযোগ্য ছিল যে সেখানকার লোকেরা এমনকি এটি কোন বছর ছিল তার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল না। আমার সফরের বছরটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩৬৯ সালের ছিল। কিন্তু মাত্র দুই বছর আগে লিবীয়রা ১৪২৯ সাল পর্যন্ত বসবাস করছিল। গণনা পরিবর্তিত হওয়ার দিনটির নাম কেউ বলতে পারেনি, বিশেষ করে যেহেতু দুজনেই খেলায় রয়ে গেছে। অনুষ্ঠান আয়োজকরা তাই এসব বাদ দিয়ে তাদের ঘোষণাপত্রের কোথাও ব্র‍্যাকেটে পশ্চিমা সাল রেখেছিলেন।"[৬৬]

কম্পিউটার সমর্থন

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Paul Lunde। "The Beginning of Hijri calendar"Saudi Aramco World Magazine। নং November/December 2005। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৯ 
  2. Watt, W. Montgomery। "Hidjra"। P.J. Bearman; Th. Bianquis; C.E. Bosworth; E. van Donzel; W.P. Heinrichs। Encyclopaedia of Islam Online। Brill Academic Publishers। আইএসএসএন 1573-3912 
  3. Hijri Calendar, Government of Sharjah, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৭ .
  4. "Important dates in Islamic Calendar in the Year 2021"Al-Habib.info। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  5. "Important dates in Islamic Calendar in the Year 2022"Al-Habib.info। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২১ 
  6. F.C. De Blois, "TA’RĪKH": I.1.iv. "Pre-Islamic and agricultural calendars of the Arabian peninsula", The Encyclopaedia of Islam, 2nd edition, X:260.
  7. A. Moberg, "NASI'", The Encyclopaedia of Islam, 2nd, VII: 977.
  8. For an overview of the various theories and a discussion of the problem of "hindsight chronology" in early and pre-Islamic sources, see Maurice A. McPartlan, The Contribution of Qu'rān and Hadīt to Early Islamic Chronology (Durham, 1997).
  9. Mahmud Effendi (1858), as discussed in Sherrard Beaumont Burnaby, Elements of the Jewish and Muhammadan calendars (London: 1901), pp. 460–470.
  10. According to "Tradition", repeatedly cited by F.C. De Blois.
  11. Muḥammad al-Khuḍarī Bayk (১৯৩৫)। Muḥāḍarāt tārīkh al-Umam al-Islāmiyya (4th সংস্করণ)। Al-maktaba al-tijāriyya। পৃষ্ঠা 59–60। 
  12. The Encyclopedia of Islam, 2nd edition, Index, p. 441
  13. al-Biruni, "Intercalation of the Ancient Arabs", The Chronology of Ancient Nations, tr. C. Edward Sachau, (London: William H. Allen, 1000/1879), pp. 13–14, 73–74.
  14. A. Moberg, "NASI'", E.J. Brill's first encyclopaedia of Islam
  15. Abu Ma'shar al-Balkhi (787–886), Kitab al-Uluf, Journal Asiatique, series 5, xi (1858) 168+. (ফরাসি এবং আরবি ভাষায়)
  16. Bab. Talmud, Sanhedrin, p. 11.
  17. Bonner 2011, page 21
  18. From an illustrated manuscript of Al-Biruni's 11th-century Vestiges of the Past (Bibliothèque Nationale, Paris, Arabe 1489 fol. 5v. (Bibliothèque Nationale on-line catalog). See also: Robert Hillenbrand, "Images of Muhammad in al-Bīrūnī's Chronology of Ancient Nations", in: R. Hillenbrand (ed.), Persian Painting from the Mongols to the Qajars: Studies in Honour of Basil W. Robinson (London/New York: I.B. Tauris Publishers, 2000), pp. 129–46.
  19. কুরআন ৯:৩৬–৩৭
  20. Sherrard Beaumont Burnaby, Elements of the Jewish and Muhammadan calendars (London: 1901) 370.
  21. "Islamic New Year: To celebrate, or not to celebrate?"The Nation (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ অক্টোবর ২০১৬। ১০ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  22. "The four sacred months"Saudigazette (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ এপ্রিল ২০১৬। 
  23. "Muharram 2020: Al Hijri date, significance of the Islamic New Year"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ আগস্ট ২০২০। 
  24. "The beginning of a new Islamic year"Gulf-Times (আরবি ভাষায়)। ২০ আগস্ট ২০২০। 
  25. "Center for Muslim-Jewish Engagement"। usc.edu। ২৮ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  26. Richards, E. G. (২০১২)। "Calendars" (পিডিএফ)। Urban, Sean E.; Seidelmann, P. Kenneth। Explanatory Supplement to the Astronomical Almanac। Mill Valley, CA: University Science Books। পৃষ্ঠা 606। আইএসবিএন 978-1-891389-85-6। ৩০ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  27. Sherrard Beaumont Burnaby, Elements of the Jewish and Muhammadan calendars (1901) 376.
  28. Tillier, Mathieu; Vanthieghem, Naïm (২০১৯-০৪-১১), "Recording debts in Sufyānid Fusṭāṭ: a reexamination of the procedures and calendar in use in the first/seventh century 1" (পিডিএফ), Geneses, First [edition]. | New York : Routledge, 2019.: Routledge, পৃষ্ঠা 148–188, আইএসবিএন 978-1-351-11331-1, এসটুসিআইডি 167115664, ডিওআই:10.4324/9781351113311-8 
  29. Chronology of Prophetic Events, Fazlur Rehman Shaikh (2001) p.52 Ta-Ha Publishers Ltd.
  30. Sherrard Beaumont Burnaby, Elements of the Jewish and Muhammadan calendars (1901) pp. 373–5, 382–4.
  31. "Calendrica"। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  32. al-Biruni, The chronology of ancient nations, tr. C. Edward Sachau (1000/1879) 327.
  33. "NASA phases of the moon 601–700"। ৮ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  34. Emile Biémont, Rythmes du temps, Astronomie et calendriers, De Borck, 2000, 393p.
  35. "tabsir.net" 
  36. Karim Meziane et Nidhal Guessoum: La visibilité du croissant lunaire et le ramadan, La Recherche n° 316, janvier 1999, pp. 66–71.
  37. "Calculations or Sighting for starting an Islamic month"www.moonsighting.com। ৮ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৭ 
  38. Oumma (২৩ জুন ২০১০)। "Le mois islamique est-il universel ou national ?"Oumma 
  39. Allal el Fassi : "Aljawab assahih wannass-hi al-khaliss 'an nazilati fas wama yata’allaqo bimabda-i acchouhouri al-islamiyati al-arabiyah", "[...] and the beginning of Islamic Arab months", report prepared at the request of King Hassan II of Morocco, Rabat, 1965 (36 p.), with no indication of editor.
  40. al-Shaârawi, Muhammad Mutawalli (২০০০)। Ahmad Azzaâbi, সম্পাদক। Fiqh al-halal wal haram। Dar al-Qalam, Beyrouth। পৃষ্ঠা 88। 
  41. "Interpretation of the Meaning of The Noble Quran"। Dr. Muhammad Taqi-ud-Din Al-Hilali PhD & Dr. Muhammad Muhsin Khan কর্তৃক অনূদিত। ২৭ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  42. Abderrahman al-Haj (২০০৩)। "لماذا الاختلاف حول الحساب الفلكي؟" [Why the difference about the astronomical calculation?] (আরবি ভাষায়)। 
  43. Allal el Fassi : "Aljawab assahih..." op. cit.
  44. The dynasty of Fatimids in Egypt used a tabular pre-calculated calendar over a period of two centuries, between the 10th and 12th centuries, before a change of political regime reactivated the procedure of observation of the new moon.
  45. "The Islamic Calendar" 
  46. "أوائل الشهور العربية .. هل يجوز شرعاً إثباتها" [The beginning of the Arab months..is it permissible according to Islamic law?]। 
  47. For a detailed discussion of Shakir's legal opinion on the subject, see "Issue N° 9" in Khalid Chraibi: Issues in the Islamic Calendar, Tabsir.net
  48. "Fiqh Council of North America Islamic lunar calendar"। ১৬ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  49. "Zulfikar Ali Shah The astronomical calculations: a fiqhi discussion" (পিডিএফ)। ৯ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  50. "Islamic Center of Boston, Wayland" (পিডিএফ) 
  51. For a detailed discussion of the issues and the FCNA and ECFR positions, see : Khalid Chraibi: Can the Umm al Qura calendar serve as a global Islamic calendar? Tabsir.net
  52. Oumma (১৯ জুলাই ২০১২)। "Le Conseil Français du Culte Musulman (CFCM): Ramadan moubarak!"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ 
  53. Nidhal Guessoum (৫ জুলাই ২০১২)। "Quel sera le premier jour du mois de Ramadan 2012? (On which date will Ramadan 2012 begin?)"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ 
  54. van Gent, R.H. (এপ্রিল ২০২১)। "The Islamic Calendar of Turkey"Mathematical InstituteUtrecht University। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  55. "Crescent sighting using the Uml al Qura calendar in Saudi Arabia To Determine Ramadan And Eid Ul Fitir Of 1422 AH And Its Implications For Unity In Different Countries By Dr. Muhammad M H Khan" (পিডিএফ)Ico Project। ২০০১। ১৫ মে ২০০৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  56. van Gent, R.H. (এপ্রিল ২০২১)। "The Umm al-Qura Calendar of Saudi Arabia"Mathematical InstituteUtrecht University। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  57. Chraibi, Khalid (২৩ জুলাই ২০০৮)। "Can the Umm al Qura calendar serve as a global Islamic calendar?"tabsir.netWordPress। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  58. "The prince's time machine: Saudi Arabia adopts the Gregorian calendar"The EconomistThe Economist Newspaper Limited। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  59. Conger, George (৮ অক্টোবর ২০১৬)। "Saudi Arabia adopts Gregorian calendar"AnglicanWordPress। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  60. Molavi, Afshin; Mawlawī, Afšīn (২০০২)। Persian Pilgrimages by Afshin Molaviআইএসবিএন 9780393051193। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৮-১১ 
  61. The "Kuwaiti Algorithm" (Robert van Gent).
  62. Gast, M.; Delheur, J.; E.B. (১৯৯২)। "Calendrier"Encyclopédie Berbère (ফরাসি ভাষায়)। OpenEdition (11): 1713–1720। ডিওআই:10.4000/encyclopedieberbere.2039অবাধে প্রবেশযোগ্য। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৮ 
  63. the start of each lunar month determined not ahead of time by astronomical calculation, but only after the crescent moon is sighted by the proper religious authorities. (source: Tripp, Culture Shock, 2009: pp. 154–5).
  64. Hagger, Nicholas (২০০৯)। The Libyan Revolution: Its Origins and Legacy। Winchester, UK: O Books। পৃষ্ঠা 109 
  65. Encyclopedia of the Developing World (2007), volume 3, p. 1338.
  66. Neil MacFarquhar (২০১০)। The Media Relations Department of Hizbollah Wishes You a Happy Birthday: Unexpected Encounters in the Changing Middle East। ReadHowYouWant। আইএসবিএন 978-1-4587-6009-8  pages 37–38.
  1. ইসলামি বর্ষপঞ্জির কোন রূপটি অনুসরণ করা হবে তার উপর সঠিক তারিখটি নির্ভর করে।
  2. সংগৃহীত পার্থক্য এবং বিভিন্ন সময়ে অধিবর্ষের সম্ভাবনার উপর নির্ভর করে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা পরিবর্তিত হয়।
  3. কিছু ধর্মতাত্ত্বিকরাও সূরা আল-বাকারাহ ২:১৮৫-কে সরাসরি দেখার প্রয়োজন হিসাবে ব্যাখ্যা করেন, কিন্তু তারা শুধুমাত্র সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব করে। কুরআনের আয়াতটি নিম্নরূপ: "১৮৫. রমজান মাসে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে, যা মানবজাতির জন্য পথপ্রদর্শক এবং হিদায়াত ও (সত্য ও অন্যায়ের মধ্যে) মাপকাঠির জন্য সুস্পষ্ট প্রমাণ। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে কেউ দেখতে পাবে। (রমজানের) মাসের প্রথম রাত্রে (অর্থাৎ নিজের ঘরে উপস্থিত) সে মাসে সওম (রোজা) পালন করতে হবে এবং যে ব্যক্তি অসুস্থ বা সফরে থাকে, সে একই সংখ্যক [দিন যেটি পালন করেনি। অন্যান্য দিন থেকে সওম (রোজা) পালন করতে হবে।] আল্লাহ আপনার জন্য সহজ করতে চান এবং তিনি আপনার জন্য কিছু কঠিন করতে চান না। এবং (তিনি চান যে) যে আপনাকে পথ দেখানোর জন্য অবশ্যই আল্লাহকে মহিমান্বিত করতে হবে [অর্থাৎ তাকবির (আল্লাহু-আকবার'', [অর্থাৎ] রমজান ও শাওয়াল মাসের অর্ধচন্দ্রাকার চাঁদ দেখে আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ বলা।] যাতে আপনি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হতে পারেন।"

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

মুক্ত উৎসের বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক

[সম্পাদনা]
  • বিয়ার্স, টি.এস. (২০১৮)। "Calendar Converter for Near East Historians" [নিকট প্রাচ্যের ঐতিহাসিকদের জন্য বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক]। muqawwim.com (ইংরেজি ভাষায়)। 
  • ওয়াকার, জন (সেপ্টেম্বর ২০১৫)। "Calendar converter" [বর্ষপঞ্জি রূপান্তরকারক]। fourmilab.ch (ইংরেজি ভাষায়)।